ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন আজ

37

অনলাইন ডেস্কঃ ভারতবর্ষকে যিনি ঘূণে ধরা সমাজকে পরিবর্তন করে আলোকিত করেছেন, সেই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৪তম জন্মদিন আজ।

বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রথম সার্থক রূপকারের জন্ম ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নেন তিনি। সীমাহীন দারিদ্র্য ও নিদারুণ অর্থ সংকটেও বিদ্যাশিক্ষা চালিয়ে গেছেন গুণী এই ব্যক্তিত্ব। কালক্রমে হয়ে উঠেছেন বিদ্যাসাগর। তাকে ঘিরে প্রচলিত আছে যে, রাতে ঘরে আলো জ্বালানোর সামর্থ্য না থাকায় রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের নিচে বসেই পড়াশুনা চালিয়ে গেছেন তিনি।

 

 

গ্রামের পাঠশালা থেকে সংস্কৃত শেখার পর বাবার সঙ্গে কলকাতায় চলে যান। সেখানেও বিভিন্ন ভাষায় শিক্ষালাভে মনোযোগ দেন তিনি। যার ধারাবাহিকতায় ১৮৩৯ সালে বাংলা, সংস্কৃতি ও ইংরেজি ভাষায় অগাধ পাণ্ডিত্যের জন্য সংস্কৃতি কলেজ সম্মানজনক ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি দান করে।

শিক্ষালাভের পাশাপাশি সমাজ সংস্কারেও বিশেষ অবদান রাখেন তিনি। তার অক্লান্ত পরিশ্রমেই নারীরা পেয়েছে তাদের পূর্ণ অধিকার, হিন্দু নারীরা পেয়েছেন মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার প্রেরণা। কলুষিত সমাজকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে সতীদাহ প্রথা উচ্ছেদ, বিধবা বিবাহ আইন পাসসহ অসংখ্য সংস্কারমূখী পদক্ষেপে তার অবদান অনস্বীকার্য। হোমিওপ্যাথি শাস্ত্রেও এই নিরহংকারী ব্যক্তির পাণ্ডিত্য ছিল। এছাড়া, বাংলা গদ্যের পাশাপাশি অবদান রেখেছেন বাংলা লিপি সংস্কারেও। তিনি ছিলেন একাধারে বাঙালি শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক ও প্রাবন্ধিক।

তিনিই প্রথম বাংলায় যতিচিহ্নের প্রচলন ঘটিয়েছিলেন। শিক্ষার প্রকৃত অর্থ যে জ্ঞানলাভ, তার হাত ধরেই মানুষ শিখেছেন। আর তাই বিবিসি বাংলার ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কে?’ জরিপে শ্রোতাদের মনোনীত শীর্ষ ২০ জন বাঙালির তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

বাঙালি সমাজে প্রগতিশীল সংস্কারের অগ্রদূত এই মহান সংস্কারকের জীবনাবসান ঘটেছিল ১৮৯১ সালে। মৃত্যুর শত বছর পারেও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তার কাজের মধ্যেই স্মরণীয় হয়ে আছেন।

পূর্বের খবরবাংলাদেশের নতুন যাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের অংশীদারত্ব চাইলেন ড. ইউনূস
পরবর্তি খবরউত্তরার শহীদ (মুগ্ধ চত্বর) মুগ্ধ মঞ্চে দুর্গাপূজার মণ্ডপের স্থান নির্ধারণ, বিতর্কিত সিদ্বান্ত