ঢাকাঃ ভারতে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার বক্তৃতা প্রচারের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা বুধবার রাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছেন। একপর্যায়ে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ধানমন্ডি ৩২, সুধাসদনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
ঢাকার ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়ক, সুধাসদনসহ বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। দলের জন্য নাম ও প্রতীক প্রস্তাব করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দুই সংগঠন।
রাত ১১টার দিকে একটি ক্রেন ও একটি এক্সকাভেটর এনে বাড়ি ভাঙা শুরু হয়। রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বাড়িটির একটি পাশ ভাঙা শেষ হয়। রাত ১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভাঙা চলছিল। সেখানে বিপুলসংখ্যক বিক্ষোভকারী স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ, মুজিববাদ ও আওয়ামী লীগবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাঙচুর
দেশের আরো কয়েকটি স্থানের মত রংপুরের দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজে স্থাপিত দুটি ম্যুরালে এই ভাঙচুর চালানো হয়।
রংপুর সিটি করপোরেশনের বুলডোজার দিয়ে একটি ম্যুরাল ভাঙতে দেখা যায়।
চট্টগ্রাম ও সিলেটে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাঙচুর

চট্টগ্রাম ও সিলেটে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বুধবার রাতে অনলাইনে ভাষণ দেওয়ার পর সেটার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ ও মশালমিছিল বের হয়।
পরে মিছিল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও জামাল খান এলাকায় গিয়ে সেখানে অবস্থিত শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয় বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন কর্মকর্তা।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায় বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

অন্যদিকে, সিলেটেও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা শেখ মুজিবের ম্যুরাল গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের একটি বুলডোজার দিয়ে ম্যুরাল ভাঙা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িও বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়ায় বুলডোজারে ভাঙা হয়েছে হানিফের বাড়ি

বুধবার রাত ১০টার দিকে শহরের পিটিআই সড়কে তিনতলা বাড়িটি ভাঙা শুরু হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে। স্থানীয় পুলিশের একজন কর্মকর্তা বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, একটি বুলডোজার দিয়ে প্রথমে বাড়ির প্রধান ফটক ও সীমানাপ্রাচীর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ছাত্র-জনতা স্লোগান দিতে থাকে ‘স্বৈরাচারের আস্তানা জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও’।
স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, এই ভাঙচুরে যারা অংশ নেন, তারা কুষ্টিয়া শহরের উপজেলা মোড় থেকে মশাল মিছিল করে বাড়িটির সামনে আসেন। সেখানে ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সময়ে মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে বুলডোজার দিয়ে ভাঙচুর করা হয়।
এরপর সেখান থেকে মিছিল নিয়ে তারা কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খানের শহরের কদমতলা সাততলা বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর করেন।
গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের দিনেও মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সর্বশেষ চিত্র

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট স্বৈরতান্ত্রিক আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের ছয় মাস ছিল গতকাল। এদিন রাত ৯টায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তৃতা প্রচার করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গতকাল দিনভরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উত্তেজনা চলে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক ছাত্র-জনতা ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফেসবুকে ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিল’ এবং ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির ডাক দেন। তাঁরা ঘোষণা দেন, রাত ৯টায় শাহবাগে জড়ো হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে যাত্রা শুরু করবেন।
অবশ্য এর আগেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হতে থাকেন। তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন।



৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙা ছাড়াও বুধবার রাতে ধানমন্ডির ৫ এ-তে অবস্থিত শেখ হাসিনার বাড়ি সুধা সদনে আগুন দেওয়া হয়। রাত ১টা পর্যন্ত খবর অনুযায়ী সেখানে আগুন জ্বলছিল। সাড়ে ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান বলেন, সাড়ে ১১টার দিকে তাঁরা আগুনের খবর পেয়েছেন।
ঢাকায় সুধাসদনেও হামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঢাকার একটি বাসভবন সুধাসদনেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশের দুইটি সূত্র বিবিসি বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তবে, হামলায় কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি তারা।
পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের দুইটি তলায় আগুন জ্বলছে।
সেখান থেকে হামলা করে বিক্ষুব্ধ লোকজন চলে গেছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র।
“এত উত্তেজিত লোকজনের মধ্যে পুলিশ কী করতে পারে,” বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ সদস্য।
এর আগে রাত আটটার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরেও হামলা এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
রাত নয়টার দিকে অনলাইনে দেয়া এক বক্তৃতায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের পাশাপাশি সুধাসদনে হামলারও নিন্দা জানান শেখ হাসিনা।

বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে খুলনার ‘শেখ বাড়ি’

খুলনা মহানগরের ময়লাপোতা এলাকায় অবস্থিত ‘শেখ বাড়ি’ নামে পরিচিত একটি স্থাপনা বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ওই বাড়িটি ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচার বাড়ি।
বুধবার রাত নয়টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা ঘোষণা দিয়ে ওই বাড়িতে ভাঙচুর চালান বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
বাড়ি ভাঙার কাজে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের দু’টি বুলডোজার ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানান তারা।
এই বাড়িতে শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সোহেল উদ্দিনসহ আরও অনেকে থাকতেন।
গত পাঁচই অগাস্টের আগেই তারা বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
গত চার ও পাঁচই অগাস্ট বাড়িটিতে দফায় দফায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল। এরপর বাড়িটিতে শুধু কংক্রিটের অবকাঠামোই অবশিষ্ট ছিল।
দালান ভাঙতে পারবে, ইতিহাস মুছতে পারবে না – শেখ হাসিনা
ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলার সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “দেশের স্বাধীনতা কয়েকজন বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলবে এই শক্তি তাদের হয়নি। তারা একটি দালান ভেঙে ফেলতে পারবে, কিন্তু ইতিহাস মুছতে পারবে না।”
গত পাঁচই অগাস্ট ভারতে পালিয়ে যাবার পর থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা। সেখান থেকেই বুধবার অনলাইনে বক্তব্য রাখেন তিনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তার বক্তব্য সরাসরি প্রচার করা হয়।
৩২ নম্বরের বাড়িতে শেখ মুজিব ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের স্মৃতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ওই বাড়িটাকে কেন ভেঙে ফেলা হচ্ছে? কারা ভাঙে, দেশের মানুষের কাছে বিচার চাই।”
বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুথ্থানে শেখ হাসিনার সরকার পতনের ছয় মাস পূর্ণ হলো বুধবার।
আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এক পোস্ট দিয়ে বলা হয়, রাত ৯টায় এক লাইভ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে ছাত্রদের উদ্দেশে কথা বলবেন শেখ হাসিনা।
এরপর ওই একই সময়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িকে কেন্দ্র করে কর্মসূচির কথা জানা যায় কয়েকটি ফেসবুক আইডি থেকে।
এছাড়া বুধবার সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।”
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে বুলডোজার মিছিল কর্মসূচি দিয়ে প্রচারণাও চালানো হয় বিভিন্ন আইডি থেকে।
শেখ হাসিনার বক্তৃতা শুরুর আগেই ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কের ঐ বাড়িতে হামলা করে একদল বিক্ষুব্ধ মানুষ।
তারা দরজা, জানালা, গেট ইত্যাদির কাঠামো খুলে নেয়। সেখানে থাকা শেখ মুজিবের একটি ম্যুরালও ভাঙচুর করে। অগ্নিসংযোগও করতেও দেখা যায় স্থানীয় গণমাধ্যমে।
‘বঙ্গবন্ধু জাদুঘর’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসা বাড়িটিতে গত পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরপরই জনরোষের শিকার হয়। সেদিনও সেখানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা।
ভাঙার ঘোষণা দিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে হামলা

ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলা করেছে একদল বিক্ষুব্ধ মানুষ। তারা ‘ভাঙা’ বাড়িতেই লাঠি সোটা নিয়ে হামলা করেছে বলে বিবিসি বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, প্রায় পাঁচ-সাতশো লোক সেখানে অবস্থান করছেন।
এদিকে, সেখানে বিক্ষুব্ধদের মিছিল করার কথা বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহমেদ মাসুদ।
“সেখানে ২৫ থেকে ৩০ জন পুলিশ সদস্য রয়েছে। আরও পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে,” বলেন তিনি।
তবে হামলা বা ভাঙচুর করা হচ্ছে কি না জানতে চাইলে উত্তর দেননি মি. মাসুদ।
বিক্ষোভকারীরা স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন। বাড়ির ভেতরের প্রবেশ করে একদল বিক্ষোভকারী ভাঙচুর চালায়। বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি গুড়িয়ে দেয়া হবে এমন গুঞ্জনও ছিল । তবে সেখানে কোনো বুলডোজার দেখা যায়নি।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ছয় মাস পর ছাত্র সমাজের উদ্দেশে শেখ হাসিনার ভাষণ দেয়ার কথা জানানো হয় গতকাল। এর তীব্র সমালোচনা করতে দেখা যায় অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে।
অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সামাজিক মাধ্যমে জানানো হয় ঠিক যে সময়ে শেখ হাসিনা বক্তব্য দেওয়া শুরু করবেন, তখনই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভবনে ভাঙচুর চালানো হবে। তবে তার আগেই ভাঙচুর শুরু হয় সেখানে।
বুধবার সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, “আজ রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে।”
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার অভিমুখে বুলডোজার মিছিল কর্মসূচি দিয়ে প্রচারণাও চালানো হয় বিভিন্ন আইডি থেকে।
‘বঙ্গবন্ধু জাদুঘর’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসা বাড়িটি পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরপরই জনরোষের শিকার হয়। সেদিনই সেখানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা।
সংস্কারের কথা বলে সব দীর্ঘায়িত করা ষড়যন্ত্র কিনা দেখতে হবে: তারেক রহমান

“কিছু মানুষ সংস্কার সংস্কার বলে সব প্রক্রিয়াকে দীর্ঘায়িত করছে” মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “দেখতে হবে এটি কোনো ষড়যন্ত্র কি না”।
বুধবার বিকেলে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির এক সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।
মি. রহমান বলেন, “জনগণের শাসন নিশ্চিত করতে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।”
“দীর্ঘায়িত করা হলে দেশে সমস্যা বাড়বে,” বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, শেখ হাসিনাসহ আন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের দেশের প্রচলিত আইনে বিচার করতে হবে।
“যদি বিচার না করা হয়, তাহলে গুম-খুনের সাথে জড়িতরা উৎসাহিত হবে। বিচারের মাধ্যমেই আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে,” যোগ করেন তিনি।
জনমত নিয়ে দলের নাম ঘোষণা করবে বৈষম্যবিরোধীরা

নতুন রাজনৈতিক দল গঠনেরউদ্যোগ নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। এ বিষয়ে জনগণেরমতামত সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে তারা। নতুন দলের জন্য নাম ও প্রতীক প্রস্তাব করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দুই সংগঠন।
প্রায় এক লাখ মানুষের মতামত সংগ্রহের লক্ষ্য ঠিক করেছে তারা।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ন ট্রেড সেন্টারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন দুই সংগঠনের নেতারা।
সংবাদসম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়র সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “ছাত্র-জনতার নেতৃত্বে সংঘটিত অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করা দেশের সর্বস্তরের নাগরিকদের, বিশেষত তরুণ জনগোষ্ঠীর নতুন আকাঙ্ক্ষা ও রাষ্ট্রকল্প ধারণ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী জনতাকে সাথে নিয়ে আমরা একটি রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি।”
তিনি জানান, রিকশাচালক, দোকানদার, দিনমজুর, গৃহকর্মী, শিক্ষক, ঝাড়ুদারসহ সর্বস্তরের এক লাখেরও বেশি মানুষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের বিষয়ে মতামত চাওয়া তাদের কর্মসূচির লক্ষ্য।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানান, অফলাইনেও অনলাইনে এক লাখ মানুষের কাছে যাবেন তারা।
“মতামতের ভিত্তিতেই ছাত্রদের নতুন দলের নাম আপনারা নির্ধারণ করবেন। দলেও মার্কাটা কী হবে সেটার মতামত আপনারা দেবেন,” যুক্ত করেন তিনি।
শেখ হাসিনার দোসররা আপনার উপদেষ্টা পরিষদে ও প্রশাসনে আছে, কীভাবে সফল হবেন: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, “শেখ হাসিনার দোসররা আপনার উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত আছে, প্রশাসনে আছেন, সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছেন। আপনি কীভাবে সফল হবেন জানি না।”
বুধবার (৫ ফ্রেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আঞ্চলিক সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘জাতীয় ঐক্য ও বর্তমান বাস্তবতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মি. আহমদ এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মি. আহমদ বলেন, “শেখ হাসিনার নিয়োজিত চুক্তিভিত্তিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আপনি দায়িত্ব নেয়ার পর দুই মাস পাঁচ দিন চাকরি করে অবসরে গেছেন। কিন্তু তিনি আপনার হয়ে কাজ করছেন নাকি শেখ হাসিনার পারপাস সার্ভ করেছেন? এভাবে সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসররা বসে আছে, আপনি কীভাবে সফল হবেন?”
গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার দাবি করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্ধারণ হোক আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচন করতে পারবে কি না। সংবিধানের বিধান মোতাবেক আপনারা আইন প্রস্তুত করুন।
“আওয়ামী লীগকে রাজপথে কতদিন পুলিশ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখবেন? আপনারা বলছেন, আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেবেন না। কিন্তু কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন,” এমন প্রশ্ন রাখেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, “আমরা বলেছিলাম, সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। সেই নিরিখে আন্তর্জাতিক আদালতের আইন সংশোধন করার দাবি জানিয়েছিলাম আমরা, বাংলাদেশের মানুষ চেয়েছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার অধ্যাদেশ জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী সময়ে কেবিনেটে তা বাতিল করা হয়। একদিকে বলবেন আওয়ামী লীগ রাজনীতি নিষিদ্ধ হোক, আবার বিচার করবেন না। রাজপথে পুলিশ দিয়ে বাধা দেবেন, এত স্ববিরোধিতা ঠিক নয়।”
‘সর্ষের মধ্যে ভূত’ রেখে কখনও প্রধান উপদেষ্টা সফল হতে পারবেন না বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সুতরাং প্রশাসন হোক, বিচার বিভাগ হোক বা নির্বাচন ব্যবস্থার মধ্য থেকে ফ্যাসিবাদীদের পরিষ্কার করতে হবে।
বেশি সময়ক্ষেপণের জন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করলে জনগণ মেনে নেবে না বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।
ডিসি-ইউএনও পদবি পরিবর্তন, ‘নয়া দিল্লির মতো’ মহানগর সরকারের প্রস্তাব

পুরনো চারটি বিভাগের সীমানাকে চার প্রদেশে বিভক্ত করে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু, কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে নতুন দুটি বিভাগ, ‘নয়া দিল্লির মতো’ কেন্দ্র শাসিত রাজধানীতে মহানগর সরকার গঠন করে প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে পুনর্বিন্যাসের জন্য সংস্কার প্রস্তাব করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
অন্যান্য প্রদেশের মতই রাজধানী সরকারেও নির্বাচিত আইন সভা ও স্থানীয় সরকার থাকবে। ঢাকা মহানগরী, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’ এর আয়তন নির্ধারণ করা যেতে পারে বলে প্রস্তাবে মত দেয়া হয়েছে।
এছাড়া, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার পদবি পরিবর্তন, জেলা পরিষদ বাতিল, উপজেলা পর্যায়ে একজন এএসপিকে ‘জননিরাপত্তা অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার মতো সুপারিশও এনেছে কমিশন।
একটির বদলের তিনটি পাবলিক সার্ভিস কমিশন গঠন এবং উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশে আনার মতো প্রস্তাবও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী।
আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ‘সবচাইতে নির্যাতিত দল’ জামায়াত মুক্তি পেয়েছে – শফিকুর

গত বছরের জুলাই-অগাস্টের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে “গোটা জাতি যেমন মুক্তি পেয়েছে, দেশের সবচাইতে বেশি নির্যাতিত দল জামায়াতে ইসলামীও মুক্তি পেয়েছে” বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ‘জুলাই ২০২৪ বিল্পবের শহীদ স্মারক’ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
মি. রহমান বলেন, তাদের এই মুক্তির জন্য বর্তমান প্রজন্মের প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করা প্রয়োজন।
“আমরা শহীদ পরিবারগুলোর কাছে গিয়েছি তাদের সম্মান দিতে এবং তাদের থেকে দোয়া নিতে। কারণ তারা সৌভাগ্যবান, তাদের পরিবার দেশের জন্য জীবন দিয়েছে,” যোগ করেন জামায়াতের আমির।
আগরতলায় বাংলাদেশের ভিসা কার্যক্রম শুরু, প্রথম দিনে ১২০টি আবেদন

ভারতের ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাই-কমিশনে বুধবার থেকে আবারও ভিসা এবং কনস্যুলার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গত বছর ডিসেম্বরের দুই তারিখে সহকারী হাইকমিশনের দফতরে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্যদের হামলার পর ভিসা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
ঢাকায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মহম্মদকেও। গত মাসে তাকে আগরতলায় ফেরত পাঠানো হয় এবং মঙ্গলবার ঘোষণা করা হয় যে আজ থেকে ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
সহকারী হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে যে প্রথম দিন ১২০টির মতো ভিসার আবেদন জমা পড়েছে।
প্রথম দিনেই বাংলাদেশের ভিসার জন্য আবেদন জানাতে এসেছিলেন এমন এক নারী বলছিলেন, “আমার বাপের বাড়ি বাংলাদেশে। ভিসা অফিস বন্ধ ছিল বলে আমি সেখানে যেতে পারছিলাম না। এখন আবারও ভিসা চালু হওয়ায় দেশে যেতে পারব।”
আরেক তরুণী বলছিলেন, “আমার আত্মীয়রা থাকেন বাংলাদেশে। অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। আগে একবার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কিছু ত্রুটির জন্য সেবার ভিসা পাইনি। কয়েক মাস বন্ধ ছিল ভিসা দেওয়া। আজ খুলল। তাই প্রথম দিনেই আবেদন করে দিলাম।”
সপ্তাহের কাজের দিনগুলোতে ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আবেদন জমা নেওয়া হবে। আর ভিসাসহ পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার সময় বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত।
তবে ঠিক কতদিনে ভিসা দেওয়া যাবে, সেটা এখনই সঠিক ভাবে বলতে পারছে না দূতাবাস সূত্রগুলো।
তারা জানাচ্ছেন, প্রায় দুই মাস এই দূতাবাস থেকে ভিসা দেওয়া বন্ধ ছিল, তাই ঠিক কত সংখ্যায় ভিসার আবেদন জমা পড়বে, তা এখনই আন্দাজ করা যাচ্ছে না। তবে তারা চেষ্টা করবেন যে যত দ্রুত সম্ভব ভিসা দিয়ে দিতে।

সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে হামলায় সাংবাদিক আহত
পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে হামলায় আহত হন সাংবাদিক জাবেদ আখতার
সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। এ হামলায় আহত এটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাবেদ আখতারকে রাজধানীর কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপির নেতাকর্মীরা এ হামলা চালান বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছে সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ল রিপোর্টার্স ফোরাম। এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি।
বুধবার দুপুর ১২টায় পাবনার ঈশ্বরদী এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীরা এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ করছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা।
এলআরএফের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম নূর মোহাম্মদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুধবার পাবনার ইশ্বরদীতে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা মামলার রায় হয় হাইকোর্টে। ওই রায়ের পর আইনজীবীদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে অপেক্ষা করছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
সে সময় ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর জন্য ধাক্কাধাক্কি করতে থাকেন পাবনার ইশ্বরদী এলাকার বিএনপির কয়েকশ নেতাকর্মী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব।
বিবৃতিতে বলা হয়, ধাক্কাধাক্কির সময় এটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাবেদ আখতারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় বিএনপি নেতাকর্মীদের।
এক পর্যায়ে পাবনার ইশ্বরদী এলাকার বিএনপির ২০-২৫ নেতাকর্মী তাকে লাথি, কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় তাকে রক্ষা করতে গিয়ে তাদের মারধরের শিকার হন সিনিয়র সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম পান্নু, সিনিয়র সাংবাদিক হাসান জাবেদসহ বেশ কয়েকজন। ভাঙচুর করা হয় টেলিভিশনের মাইক্রোফোনও।
পরে বিএনপির আইন সম্পাদক কায়সার কামাল আহত মি. আখতারকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির অ্যাম্বুলেন্সে করে কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে পাঠান।
হামলার পরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকরা সংবাদ সম্মেলন বর্জন করে অ্যানেক্স ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মিশন বিবিসি বাংলাকে জানান, হামলার ঘটনা সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে অবহিত করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত সাংবাদিকরা যাতে নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রধান বিচারপতির সাথে দেখা করবেন সংগঠনের নেতারা।
জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে এলআরএফের পক্ষ থেকে।
কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা

কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হেফাজতে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করেছেন তার স্ত্রী ইয়াসমিন নাহার। সদরের কোতয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন তিনি।
ছয় জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, “বিবাদীরা জায়গা-জমির বিরোধের জেরে আক্রোশান্বিত হয়ে পরস্পরের যোগসাজশে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটক রেখে মারধর করে হত্যা করে।”
গত ৩১শে জানুয়ারি কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হয়ে হেফাজতে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় সেনা ক্যাম্পের কমান্ডারকে প্রত্যাহার করে ‘উচ্চপদস্থ তদন্ত কমিটি’ গঠনের কথা জানিয়েছিল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বা আইএসপিআর।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন নিহত তৌহিদুল ইসলামকে শুক্রবার পুলিশ অসুস্থ অবস্থায় পেয়েছিলো।
“অসুস্থ অবস্থায় পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেছি। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন। এখন পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ পাওয়া যাবে” বলছিলেন তিনি।
নিহত তৌহিদুল ইসলাম কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক ছিলেন বলে জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাব

কোনো দণ্ডিত অপরাধীকে ক্ষমা প্রদর্শনে রাষ্ট্রপতি বা নির্বাহী বিভাগের যে এখতিয়ার রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আজ প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিশন।
পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে সংস্কার প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
মোট ২৮ দফা প্রস্তাবের ছয় নম্বরে রয়েছে ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন’ সংক্রান্ত অংশটি।
এতে বলা হয়েছে, “আদালত কর্তৃক চূড়ান্তভাবে দণ্ডিত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি বা নির্বাহী বিভাগ কর্তৃক ক্ষমা প্রদর্শনের একচ্ছত্র ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে বোর্ড প্রতিষ্ঠা, যার সুপারিশের ভিত্তিতে ক্ষমা প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে।”
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতিকে ‘ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার’ দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধী রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পাওয়ার ঘটনা আলোচনা সমালোচনা তৈরি হওয়ার নজির রয়েছে।
২০১১ সালে লক্ষ্মীপুর জেলায় স্থানীয় বিএনপি নেতা নুরুল ইসলামকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এএইচএম বিপ্লবকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। মি. বিপ্লব স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরের ছেলে। এ ঘটনায় বাংলাদেশে সমালোচনা দেখা গিয়েছিল।

জনপ্রশাসন ও বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর

জনপ্রশাসন ও বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী এবং বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রতিবেদনগুলো হস্তান্তর করেন।
দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের জন্য গত অক্টোবরে বেশ কয়েকটি সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রথম দফায় জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচনব্যবস্থা, সংবিধান ও বিচার বিভাগ—এই ছয়টি ক্ষেত্রের সংস্কার কমিশন হয়।
দ্বিতীয় ধাপে গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারীবিষয়ক ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সংস্কারের প্রস্তাব তৈরির জন্য পাঁচটি কমিশন গঠিত হয়।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশন ১৫ জানুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেয়।
গত ১৮ নভেম্বর গঠিত গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম, নারী বিষয়ক ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন দিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় পায়।
জুলাইয়ে আহতদের জন্য আসা বিদেশি চিকিৎসকদের কর অব্যাহতি দিয়েছে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত রোগীদের চিকিৎসা করার জন্য আসা বিদেশি চিকিৎসকদের সব ধরনের কর অব্যাহতি দিয়েছে সরকার।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারের দেয়া ফি, হোটেলে থাকার খরচ, খাবারের ব্যয় ও বিমান ভাড়ার অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি দিয়েছে সরকার।
এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ জনসহ সব আসামি খালাস
পাবনার ঈশ্বরদীতে ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি ও বোমা হামলার অভিযোগে করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নয় জনসহ সব আসামিকে খালাস করে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।
এছাড়া খালাস হওয়া আসামিদের মধ্যে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ২৫ জন, ১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১৩ জন।
আজ বুধবার হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স মঞ্জুর এবং আসামিদের আপিল ও জেল আপিল খারিজ করে এ রায় দেয়া হয়েছে।
এদিকে, এ রায়ের পর সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে কথা কাটাকাটির পরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে ঈশ্বরদী থেকে আসা বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় আহত হন এটিএন নিউজের সিনিয়র রির্পোটার জাবেদ আক্তার।
তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ এ সময় বৈশাখী টেলিভিশনের মাইক্রোফোন ভাঙচুর করাসহ মারধর করা হয় আরও কয়েকজন সাংবাদিককে।
রায় ঘোষণার পর বেলা ১২টার দিকে হাইকোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে সংবাদ সম্মেলন বর্জন করেন সাংবাদিকরা।
ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং জড়িতদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত সাংবাদিকরা।