ঢাকাঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলকে জানালেন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় সরকারকে এ নির্বাচন করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশে সফরে আসা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় সরকারকে এই নির্বাচন করতে হচ্ছে। নির্বাচন করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। তার এই ব্যাখ্যা প্রতিনিধি দল ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন ওবায়দুল কাদের। পরে তিনি সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পাঁচ বছর পরপর নির্বাচন করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। নির্বাচিত সরকার, নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে, এটাই সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘তারা আমাদের আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের বক্তব্য শুনেছেন। বাংলাদেশের বাস্তবতায় এই নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচনে ২৭টার মতো দল আছে, এক হাজার ৮৯৬ জন প্রার্থী আছে। এসব বিষয় তারা ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন।’
কাদের বলেন, ‘তারা আমাদের নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের প্রদত্ত যে দায়িত্ব সেটা পালন করছেন। তারা আমাদের কথাই বেশি শুনতে আগ্রহী ছিলেন। মন্তব্য তারা তেমন করতে চাননি। আমরাও জোর করিনি। আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছি।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ভয়ভীতি এসব আছে। তারপরও আমরা বলেছি ভোটের টার্ন আউট সন্তোষজনক হবে। মানুষের আগ্রহ আছে। সারাদেশের ভোটারদের মধ্যে যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তাতে করে টান আউট নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কারণ নেই। বিএনপি একটি বড় দল, টার্ন আউট নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে। নির্বাচনে গণতান্ত্রিক দেশের স্ট্যান্ডার্ড বজায় থাকবে সেটাই আমরা বলেছি।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ভায়োলেন্স নিয়ে তারা জানতে চেয়েছেন। আমরা বলেছি, ভায়োলেন্স তো হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জবাব দিচ্ছে ভায়োলেন্স দিয়ে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাদের (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) আসলে মাথাব্যথা ইউক্রেন নিয়ে, গাজা-ইজরায়েল-ফিলিস্তিন নিয়ে। কাজেই শক্তিধররা বেশি মাথা ঘামাচ্ছেন এসব নিয়ে। কঙ্গোতে একটা নির্বাচন হয়েছে, কারও সাথে কারও যোগাযোগ নেই। ফলাফল হয়ে গেছে। পাকিস্তান ভাল ডেমোক্রেসির উদাহরণ, এটা কেউ বলবে না।’
এই নির্বাচনে বিএনপির স্বতন্ত্রও আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বতন্ত্র শুধু আওয়ামী লীগের না। বাইরেরও আছে। অনেকে বিএনপি থেকে এসে হয়েছে।’
আসন ভাগাভাগি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা কাউকে সমর্থন দিতে পারি না? দিই তো। কোথাও কোথাও ১৪ দলের নৌকা দিয়েছি। সেখানে আমাদের সমর্থনের বিষয় তো আছেই। বিএনপি বলবেই ভাগাভাগি। তারা নিজেরাই তো ভুয়া হয়ে গেছে। ভুয়ারা কত কথাই বলবে।’
নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতিও সন্তোষজনক হবে বলে মনে করেন তিনি।
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও তাদের স্বজন-নির্ভরশীলদের এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বহু প্রার্থীর সম্পদ ও আয় বৃদ্ধি বিষয়ক টিআইবির প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘টিআইবি বিএনপির শাখা সংগঠন। বিএনপি যা বলে তারাও তা বলে। তারাও যা বলে টিআইবিও তা বলে।’