নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আজ ৭৭ বছরে পা রাখলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৭৭ বছরের জীবনে তিনি ৪৩ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দলটির এক সংকটময় মুহূর্তে তিনি নেতৃত্ব নিয়েছিলেন এবং প্রায় একাই তিনি আওয়ামী লীগকে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী জনপ্রিয় দলে পরিণত করেন। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখেছেন শেখ হাসিনাই। যে দলটি পরিচিত ছিল বিরোধী দল হিসেবে, শুধুমাত্র লড়াই-সংগ্রাম এবং জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য যে দলের অসংখ্য নেতাকর্মী জীবন উৎসর্গ করেছিলেন সেই দলটিকে টানা পনেরো বছর তিনি ক্ষমতায় রেখেছেন। আর এই দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রাখতে গিয়ে শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা এবং ম্যাজিক দেখিয়েছেন। বিভিন্ন সংকটে শেখ হাসিনার ম্যাজিক দেখেছে বাংলাদেশ, গোটা বিশ্ব। আবার একটি রাজনৈতিক সংকটের মুখোমুখি বাংলাদেশ। বিশেষ করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা রকম অনিশ্চয়তা, উৎকণ্ঠা। এর মধ্যেই সবাই তাকিয়ে আছেন শেখ হাসিনার দি এবার কি ম্যাজিক দেখাবেন শেখ হাসিনা?
বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকটে শেখ হাসিনার ম্যাজিক একটি বিস্ময়কর ব্যাপার। বিভিন্ন সময় যখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হতাশ, উদ্বিগ্ন, শঙ্কিত ঠিক সেই সময় শেখ হাসিনা রাজনীতিতে একটি সমাধানের পথ নিয়ে হাজির হয়েছেন। তার ম্যাজিকের কারণে রাজনৈতিক সংকটকে কেটে গেছে। দুর্যোগের মেঘ পরিষ্কার হয়ে সূর্যের উদয় ঘটেছে। এবারও কি তেমন কিছু ঘটাবেন শেখ হাসিনা?
বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নেই, ২০০৭ এর এক-এগারোর কথা-ই যাক। এক- এগারো সময় ধরে নেওয়া হয়েছিল যে, শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা হবে, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু আটক হয়েও তিনি তার রাজনৈতিক দূরদর্শিতার কারণে অবিসংবেদিত নেতা হিসাবে আবির্ভূত হন। এক-এগারো সরকারকে পরাভূত করার ক্ষেত্রে তার রাজনৈতিক কৌশল এবং দূরদর্শিতা আজও রাজনৈতিক গবেষণার বিষয়। তিনি সেই সময় সেনা সমর্থিত সরকারকে তার কৌশলের কারণেই পরাস্ত করেছিলেন এবং তাদের কাছে নিজেকে একজন দক্ষ এবং দেশ প্রেমিক নেতা হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়ে ছিলেন।
এক-এগারোর পর বাংলাদেশ আরেকটি সংকটের মুখোমুখি হয় ২০১৪ নির্বাচনের আগে। ২০১৩ সালে বিএনপি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই সময় সকলে ধরে নিয়েছিল যে, দেশ একটি গভীর সংকটের মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে। নির্বাচন না হলে দেশে আরেকটি সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হবে। কিন্তু শেখ হাসিনা অদ্ভুত দক্ষতায় এবং তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় সে পরিস্থিতি সামাল দেন। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অর্ধেকের বেশি আসনে কোনো ভোটই হয়নি। তারপরও ওই সংসদ পূর্ণ মেয়াদ দায়িত্ব পালন করেছিল। আর ২০১৮ সালে শেখ হাসিনার ম্যাজিক ছিল আরও দেখার মতো। সেই সময় তিনি বিএনপি সহ সকল রাজনৈতিক দলকে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে নিয়ে আসতে পেরেছিলেন। তাই প্রশ্ন উঠেছে এবার শেখ হাসিনা কি ম্যাজিক দেখাবেন? তার হাতে নিশ্চয়ই রাজনৈতিক সংকট সমাধানের কোনো সমাধান আছে। আগামী ৪ অক্টোবর শেখ হাসিনা দেশে ফিরবেন। তারপর বোঝা যাবে যে, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে তিনি কি করবেন।
আমরা কোনো স্যাংশনে পরোয়া করি না: প্রধানমন্ত্রী
আজ যে উন্নয়ন সেটি যেন সাসটেইনেবল হয় আমরা সেটা করব। কোনো দেশের স্যাংশনে পরোয়া করেন না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের মাটি আছে, মানুষ আছে। সেই মাটি ও মানুষ দিয়েই বঙ্গবন্ধু দেশ গড়েছিলেন। আমিও তাই গড়ছি। বাংলাদেশের জনগণ আমার পরিবার। আমি আমার পরিবারের জন্য রাতদিন পরিশ্রম করে যাচ্ছি।’
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইশতেহার প্রস্তুত করা হচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ করার কথা দিয়েছিলাম, সেটা করেছি। এবার হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আজ যে উন্নয়ন সেটি যেন সাসটেইনেবল হয় সেটি আমরা করব।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দিনবদলের সনদে বদলে গেছে বাংলাদেশ। সামনের দিন আরও বদলাবে। আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছি। সেজন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা নির্বাচনী ইশতেহার প্রস্তুত করছি, আগামীতে আমাদের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ।’
উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ২০২৬ থেকে যে যাত্রা শুরু হবে তার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা।
সামনের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস আছে। তারা মনে করে একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে দেশের মানুষের ভাগ্য পরবর্তন করতে। ভোটের মাধ্যমে মানুষ সেই আস্থার প্রতিদান দেবে বলেই আমি বিশ্বাস করি।’
বাংলা ইনসাইডার