লাশ যশোর হাসপাতালে ময়না তদন্তের পর নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে৷ নিহত সিপাহি মোহাম্মদ রইশুদ্দীনের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনকষা ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামে৷
তার চাচাতো ভাই আবদুল মমিন ডয়চে ভেলেকে বলেন, নিহতের বড়ভাই ওয়াসিম আকরামের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে৷ রইশুদ্দীনেরা পাঁচ ভাই-বোন৷ বাবা-মা বেঁচে আছেন৷ রইশুদ্দীনের স্ত্রী ও দুই বছর এবং তিন মাসের দুইটি শিশু সন্তান আছে৷
তাকে পাচারকারীদের সঙ্গে ভাবার প্রশ্নই ওঠে না: আব্দুল মমিন
এর আগে ৪৯ বিজিবি কমান্ডার লে. কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল সোমবার গভীর রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, সোমবার ভোর আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে বিজিবি যশোর ব্যাটালিয়নের ধান্যখোলা বিওপি’র জেলেপাড়া পোস্ট সংলগ্ন এলাকায় ভারত থেকে আসা একদল গরু চোরাকারবারিকে সীমান্ত অতিক্রম করে আসতে দেখে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর টহল দল তাদের ‘চ্যালেঞ্জ’ করে৷ চোরাকারবারিরা তখন দৌড়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে৷ এ সময় বিজিবি টহল দলের সদস্য সিপাহী মোহাম্মদ রইশুদ্দীন চোরাকারবারীদের ধাওয়া করতে করতে ঘন কুয়াশার কারণে দলবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন ৷ প্রাথমিকভাবে তাকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায়, তিনি বিএসএফের গুলিতে আহত হয়ে ভারতের অভ্যন্তরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন৷ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়,ঘটনার পরপরই এই বিষয়ে ব্যাটালিয়ান কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক করা হয় এবং জানা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই সৈনিক মারা গেছেন৷ এই ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি প্রতিবাদলিপি পাঠানোর কথাও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে৷
বিএসএফ-এর বক্তব্য
তবে বিএসএফ-এর সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের মুখপাত্র ডিআইজি একে আর্য ভারতে ডয়চে ভেলের প্রতিনিধিকে বলেছেন, ‘‘২২ জানুয়ারি রাতে বনগাঁ সীমান্তে বিএসএফের এক জওয়ান একটি গরু পাচারকারী দলকে চিহ্নিত করে৷ বিএসএফ-এর জওয়ান ওই পাচারকারীদের ধাওয়া করলে তারা পাল্টা আক্রমণ চালায়৷ প্রাণ বাঁচাতে বিএসএফ-এর জওয়ান একটি গুলি চালায়৷ তাতে এক পাচারকারী আহত হয়৷ বাকিরা পালিয়ে যায়৷”
বিএসএফ মুখপাত্রের দাবি, পাচারকারী দলটি ভারতের সীমান্তের ভিতর প্রায় ১০০ মিটার ঢুকে গিয়েছিল৷ পালানোর সময় সীমান্ত থেকে ৫০ মিটার দূরে বিএসএফ-এর জওয়ান গুলি চালায়৷ গুলিবিদ্ধ হয়ে সেখানেই সেই ব্যক্তি পড়ে যান৷ এরপর বিএসএফ-এর বাকি দল এসে ওই ব্যক্তিকে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করেন৷ সেখানেই তার মৃত্যু হয়৷ নিহত ব্যক্তির কাছে কোনো পরিচয়পত্রও ছিল না বলে দাবি বিএসএফ-এর৷ তাদের আরো দাবি, পরে বিজিবির কাছ থেকেই জানা যায় যাকে গরুপাচারকারী ভেবে গুলি করা হয়েছে তিনি আসলে বিজিবির জওয়ান৷
বিএসএফ-এর এমন বক্তব্যের জবাবে ৪৯ বিজিবির কমান্ডার লে. কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল বুধবার সন্ধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ওনারা (বিএসএফ) ওনাদের সাফাই তো গাইবেনই৷ এখন তদন্ত চলছে, তাই আমরা কিছু বলতে চাই না৷ বললে বলতে পারি৷ বিষয়টি দুই রাষ্ট্রের এবং স্পর্শকাতর৷ তাই হঠাৎ করে কিছু বলে দেয়া ঠিক না৷”
তিনি বলেন, ‘‘ঘটনার পর আমরা পতাকা বৈঠক করে ঘটনা লিখিতভাবে জানিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেছি৷ আমাদের লেভেলসহ রাষ্ট্রের অন্যান্য লেভেল থেকেও বিষয়টি বলা হয়েছে৷ তদন্ত শেষ হোক, আমরা তখন বলবো৷”
দুই পক্ষ মিলে বিষয়টির তদন্ত হওয়া দরকার: খালিদ মাহমুদ চৌধুরী
বাংলাদেশের নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কীভাবে বিজিবি সদস্য হত্যার শিকার হলেন, তা তদন্তের বিষয়৷ তদন্ত না করে তারা ( ভারতীয় পক্ষ) যদি এ ধরনের কথা বলে থাকে, তাহলে তা সঠিক হয়নি৷ দুই পক্ষ মিলে বিষয়টির তদন্ত হওয়া দরকার৷”
একই কথা বলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির ৷ তার কথা, ‘‘দুই দেশ মিলে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত হওয়া প্রয়োজন৷ তার আগে ওই ধরনের কথা বিবেচনাপ্রসূত নয়৷”
আর নিহত রঈশুদ্দীনের চাচাতো ভাই আব্দুল মমিন বলেন, ” তিনি দেশের সেবা করতেই বিজিবিতে যোগ দিয়েছিলেন৷ তার বড় ভাইও একজন সেনা সদস্য৷ ঘটনার রাতে তিনি চোরাচালানিদের বিরুদ্ধে অভিযানে ছিলেন৷ অত্যন্ত ভালো মানুষ হিসেবে এলাকায় তার পরিচিতি আছে৷ তাকে পাচারকারীদের সঙ্গে ভাবার প্রশ্নই ওঠে না৷”
সীমান্ত হত্যার সুদীর্ঘ অতীত
বার বার প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএএসএফের হাতে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা থামছে না৷ গত পাঁচ বছরে বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনে ১৬৬ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন৷ তাদের প্রায় সবাইকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ৷ ২০২৩ সালে ২৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে৷ ২০২২ সালে ২৩ জন এবং ২০২১ সালে ২৪ জন ৷ ২০২০ সালে ৪৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে৷ ২০১৯ সালে হত্যা করা হয়েছে ৪৩ জনকে৷ এই সময়ে অপহরণের ঘটনাও ঘটেছে৷ আর আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০০ জন৷ এই তথ্য মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের৷ এর আগে ২০১৯ সালে জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানিয়েছিলেন, তার আগের ১০ বছরে সীমান্তে বিএসএফের হাতে ২৯৪ জন নিহত হয়েছেন৷ তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, সীমান্ত হত্যা কমে আসছে৷ কিন্তু বাস্তব চিত্র অনেকটাই অন্যরকম৷
ভারতের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বার বার সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা এবং লেথাল (প্রাণঘাতী) অস্ত্র ব্যবহার না করার কথা বলা হয়৷ কিন্তু তা মানা হয়নি কখনোই৷ প্রতিটি হত্যার পরই দাবি করা হয় নিহতরা চোরাচালানি বা গরু চোরাচালানি৷
প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “সীমান্তে চোরচালানি তো শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে৷ বাংলাদেশে তো ভারতীয় গরু আসে না৷ তারপরও এইসব ঘটনা কেন ঘটছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া দরকার৷” মঙ্গলবার ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মা সচিবালয়ে তার সঙ্গে বৈঠক করলেও সীমান্ত হত্যা নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি বলে জানান তিনি৷ তবে প্রতিমন্ত্রী মনে করেন, বিজিবি সদস্য হত্যার ঘটনাটি একটি বিাচ্ছিন্ন ঘটনা৷
ভারত আমাদের প্রতি অন্যায়, অবিচার করছে: ড. মিজানুর রহমান
মানবাধিকার কশিনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের কথা, “এই ঘটনার মধ্য দিয়ে নতুন সরকারকে ভারত বোধ হয় একটু শক্তি প্রয়োগ করে দেখাতে চায় ‘তোমরা আমাদের অনুগত থাকো, না হলে বিপদ হতে পারে৷’ এটা হলো ভারতের বিগ ব্রাদারলি মনোভাব৷ বারবার তারা সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামানোর কথা বললেও তা করছে না৷”
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন. “সে (রঈশুদ্দীন) চোরাচালানি হোক, খুনি হোক, কাউকে তুমি গুলি করে হত্যা করতে পারো না৷ ভারত আমাদের প্রতি অন্যায়, অবিচার করছে৷”
আর সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘‘এটা তো বারবার দেখছি ভারত কথা দিয়ে কথা রাখে না৷ আমাদের সঙ্গে ভারতের যে সুসস্পর্ক, আসলে এইসব আচরণের জন্য তা সুখকর নয়৷ আমাদের সরকারেরও উচিত এটা নিয়ে শক্ত অবস্থানে যাওয়া৷’’
সীমান্তে বিএসএফের হাতে বিজিবি সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর মন্তব্য পাওয়া যায়নি৷ আর মঙ্গলবার সাংবাদিকরা এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো জবাব দেননি৷
নিহত বিজিবি জওয়ানকে নিয়ে বিএসএফ যা বলছে
গত ২৩ জানুয়ারি বিজিবি-র যশোর ব্যাটেলিয়নের লেফটন্যান্ট কর্নেল আহমেদ জামিল চৌধুরী একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। সেখানে বলা হয়েছে যশোর অঞ্চলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর ছোঁড়া গুলিতে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-র এক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ঠিক কীভাবে এই ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য ওই বিবৃতিতে ছিল না।
এ বিষয়ে বিএসএফ-কে প্রশ্ন করেছিল ডিডাব্লিউ। বিএসএফ-এর সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের মুখপাত্র ডিআইজি একে আর্য ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ”২২ জানুয়ারি রাতে বনগাঁ সীমান্তে বিএসএফ-এর এক জওয়ানএকটি গরুপাচারকারী দলকে চিহ্নিত করে। বিএসএফ-এর জওয়ান ওই পাচারকারীদের ধাওয়া করলে তারা পাল্টা আক্রমণ চালায়। প্রাণ বাঁচাতে বিএসএফ-এর জওয়ান একটি গুলি চালায়। তাতে এক পাচারকারী আহত হয়। বাকিরা পালিয়ে যায়।” বিএসএফ মুখপাত্রের দাবি, পাচারকারী দলটি ভারতের সীমান্তের ভিতর প্রায় ১০০ মিটার ঢুকে এসেছিল। পালানোর সময় সীমান্ত থেকে ৫০ মিটার দূরে বিএসএফ-এর জওয়ান গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে সেখানেই সেই ব্যক্তি পড়ে যান। এরপর বিএসএফ-এর বাকি দল এসে ওই ব্যক্তিকে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
বিএসএফ মুখপাত্রের দাবি, ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর তারা বিজিবি-র তরফে একটি কল পান। বিজিবি দাবি করে আহত ব্যক্তি তাদের জওয়ান। কিন্তু আহত ব্যক্তির কাছে কোনো পরিচয়পত্র ছিল না। বিজিবি-র কাছ থেকেই বিএসএফ জানতে পারে যে, বিএসএফ যাকে গরুপাচারকারী ভেবেছিল তিনি আসলে বিজিবি-র জওয়ান। বুধবার সকাল ন’টা নাগাদ ওই জওয়ানের দেহ বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে বিএসএফ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে মাসুম মানবাধিকার সংগঠন। সংগঠনের প্রধান কিরীটী রায় ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ”আমরা শুনেছি বিজিবি-র ওই জওয়ান ডিউটি-তে ছিলেন না। চেক পোস্টেই তিনি ঘুমোচ্ছিলেন। সে কারণে তার পরনে ইউনিফর্ম ছিল না। গুলির আওয়াজ পেয়ে ঘটনাস্থলের দিকে তিনি দৌড়ে যান। তখনই তার পেটে গুলি লাগে।”
হাকিমপুর সীমান্ত: এপারে ঘর, ওপারে জমি, মাঝে বিএসএফ
বিএসএএফ-এর মুখপাত্র অবশ্য এই বক্তব্যের উপর কোনো মন্তব্য করতে চাননি। বিএসএফ-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কেন ওখানে গুলি চালানো হয়েছিল। বিএসএফ-এর জবাব, পাচারকারীরা প্রথম আক্রমণ করে। বিএসএএফ-এর যেহেতু একজনই জওয়ান ছিলেন, তাই আত্মরক্ষা করতে তিনি গুলি চালাতে বাধ্য হন। যে জওয়ান গুলি চালিয়েছে, বিএসএএফ-এর হাইকম্যান্ড ইতিমধ্যেই তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছে।
কিরীটীর বক্তব্য, সীমান্তে গুলি চালানোর ঘটনা নতুন নয়। বনগাঁ সীমান্তে শুটিয়া অঞ্চলে এর আগেও গুলি চলার ঘটনা ঘটেছে। মৃত্যুও হয়েছে। শুধু বাংলাদেশি নয়, ভারতীয়দেরও মৃত্যু হয়েছে ওই অঞ্চলে। বস্তুত, রাতের দিকে ওই অঞ্চলে অনেকেই মাছ ধরতে যান। সে সময়ও বিএসএফ গুলি চালায় বলে অভিযোগ। যদিও বিএসএফ এই অভিযোগ মানতে নারাজ।
বিএসএএফ-এর পাল্টা প্রশ্ন, বিজিবি-র ওই জওয়ান কেন ইউনিফর্ম ছাড়া, পরিচয়পত্র ছাড়া গরুপাচারকারী দলের সঙ্গে ছিলেন? অন্যদিকে, কিরীটীর বক্তব্য, গরুপাচারকারীদের একটি দল ভারতের দিকেও ছিল। বাংলাদেশের দিক থেকে যে দলটি সীমান্ত পার করে আসছিল তারা ভারতের ওই দলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিল। তাদের কাছে যে খবর আছে, তাতে ওই সময় বিজিবি-র জওয়ান সেখানে ছিলেন না। তিনি পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বিএসএফ-এর অবশ্য দাবি, নিহত ব্যক্তি প্রথম থেকেই গরু পাচারকারী দলের সঙ্গে ছিলেন।