আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বিএনপি-জামায়াত বানচাল করলে পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকাঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনর্ব্যক্ত করেছেন, বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জামায়াতে ইসলামী আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।
জনগণই তাঁর দলের শক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কেউ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে পরিণতি ভালো হবে না।”
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে তেজগাঁওয়ে দলটির ঢাকা জেলা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ নেয়নি, কারণ জয়ের ব্যাপারে তাদের কোনো আস্থা ছিল না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত ২০১৮ সালের নির্বাচনকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করলেও তারা তাদের দাবির সমর্থনে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ চায় দেশে গণতন্ত্র বিরাজ করুক এবং রাজনৈতিক দলগুলো অবাধে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, “কিন্তু বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আওয়ামী লীগ সেই সুযোগ পায়নি। তাদের শাসনামলে সারা দেশে আওয়ামী লীগের প্রায় ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়।”
নির্বাচনের নামে প্রহসন করতে ‘কিংস পার্টি’ গঠন করছে সরকার,বিএনপির সিনিঃ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী
এদিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনের নামে প্রহসন করার জন্য সরকার বিভিন্ন এজেন্সি ব্যবহার করে তথাকথিত কিংস পার্টি গঠন করছে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করে আরও বলেন, কিছু লোক সামান্য অর্থ ও বিভিন্ন সুবিধার লোভে প্রহসনমূলক নির্বাচনে অংশ নিতে আত্মা বিক্রি করছে।
তিনি বলেন, “দেশের মানুষ মাফিয়া গোষ্ঠীর এই নির্বাচনী তফসিল প্রত্যাখ্যান করায় ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা এখন তথাকথিত কিংস পার্টি তৈরি করে নির্বাচনের নামে প্রহসন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।”
সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নির্বাচনে অংশ নিতে চাপ সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “শেখ হাসিনা তাঁর বিভিন্ন সংস্থাকে মাঠে নামিয়েছেন তথাকথিত কিংস পার্টি গঠনের জন্য। বিভিন্ন দলের নেতাদের ভাড়া করতে গরুর হাটের মতো দর কষাকষি চলছে। অনেক দেশপ্রেমিক নেতাকে আওয়ামী লীগের কিংস পার্টিতে যোগদানের জন্য চাপ ও ভয় দেখানো হচ্ছে।”
তিনি বলেন, লুটপাটের টাকার ভাগ পাওয়ার অঙ্গীকারে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ছেড়ে কিছু মানুষ তথাকথিত কিংস পার্টিতে যোগ দিয়ে বঙ্গভবন ও গণভবনে যাচ্ছে।
কোনো দল বা ব্যক্তির নাম সরাসরি উল্লেখ না করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিশ্বাসঘাতকদের ইতিহাসের ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হবে। “এই রং পরিবর্তনকারী পরজীবী রাজনীতিবিদরা জনগণের সংকেত টের পাচ্ছেন না।”
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার গণতন্ত্রকামী জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে তল্লাশি চালিয়েছে, গ্রেপ্তার করছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে।”
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা হেলমেট পরে আন্দোলনে সক্রিয় থাকা নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, সরকারের নির্দেশে বিচার বিভাগ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ‘মিথ্যা ও কাল্পনিক’ মামলায় সাজা দিচ্ছে।
বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির অন্তত ৫১৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।