নিউজ ২১ ডেস্কঃ সারাদেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি বলছে তাদের ওপর দিয়ে এখন ‘গ্রেফতার ঝড়’ চলছে। যদিও ‘মাঠের রাজনীতিতে খুব একটা সক্রিয় নন’ এমন কিছু নেতার গ্রেফতার দলের মধ্যেই অনেককে বিস্মিত করছে।
পাশাপাশি দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হতে পারে -এই বিবেচনায় হরতাল অবরোধ ছাড়াও নতুন কী ধরনের কর্মসূচি দেয়া যায় তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে দলটি। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
দলটি এখন ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে, যা চলবে মঙ্গলবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত। এরপর বুধ ও বৃহস্পতিবারের জন্য নতুন কর্মসূচি আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে দলীয় সূত্রগুলো বলছে, হরতাল কিংবা অবরোধ ছাড়াও আর কী কী ধরনের কর্মসূচি দেয়া যায় তা নিয়ে চিন্তা করতে দলের নেতাদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে শীর্ষ পর্যায় থেকে।
“বিএনপির আন্দোলন দারুণভাবে চলছে এবং আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা চেষ্টা করছি সহিংস না হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে। সামনের পরিবেশ পরিস্থিতিই বলে দিবে আমরা কোন দিকে যাবো,” দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন।
দলের কেন্দ্রীয় কমিটির আরেকজন নেতা কায়সার কামাল বিবিসি বাংলাকে বলছেন, যে কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ থাকবে বলে মনে হবে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী যে ধরনের কর্মসূচির প্রয়োজন অনুভূত হবে সামনে সে ধরনের কর্মসূচিই আসবে।
ওদিকে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নিয়মিত ব্রিফিং-এ জানিয়েছেন, ২৮শে অক্টোবরের মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে এবং এরপর রবিবার পর্যন্ত দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১২২ টি মামলা হয়েছে এবং গ্রেফতার হয়েছেন ৫২৮৪ জন।
তবে পুলিশ জানিয়েছে, ২৮শে অক্টোবর থেকে পরবর্তী সাত দিনে ৮৯টি মামলায় ২১৭২ জনকে গ্রেফতার করেছে তারা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২৮শে অক্টোবরের সহিংসতা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও পুলিশ হত্যার জন্য তাদের (আটক বিএনপি নেতাদের) বিচার হতেই হবে।
গ্রেফতার-ঝড়ের দাবি বিএনপির
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, সারা দেশে তাদের নেতাকর্মীদের ওপর এখন ‘গ্রেফতার ঝড়’ বয়ে চলেছে এবং তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত কেউই এর বাইরে থাকছেন না।
“তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত কাউকেই রেহাই দেয়া হচ্ছে না। একাত্তরের পরিস্থিতি বিরাজ করছে এখন দেশে। এভাবে সারা দেশকে বিএনপি শূন্য করে নির্বাচনের নামে তামাশা করবে তারা। নির্বাচন কমিশন শেখ হাসিনার তালিকা অনুযায়ী বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করবে,” অনলাইন ব্রিফিংয়ে বলছিলেন মি. রিজভী।
এদিকে শনিবার রাতে ঢাকা থেকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও শাজাহান ওমরকে আটকের ঘটনায় দলের মধ্যেই বিস্ময় তৈরি হয়েছে। কারণ এই দুজন সমাবেশগুলোতে নিয়মিত বক্তৃতা দিলেও মাঠের রাজনীতিতে খুব একটা সক্রিয় নন।
এর আগে সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও মিডিয়া সেলের প্রধান জহির উদ্দিন স্বপনকে আটকের ঘটনাও অনেককে অবাক করেছিলো। সংঘাত সহিংসতার মধ্যে কখনো তাদের খুব একটা দেখাও যায়নি।
তারও আগে দলের মহাসচিব হওয়ার কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেব মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করা হলেও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে আটক করা হবে না বলেই ধারণা ছিলো দলের অনেকের।
“আসলে একটি কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। কাকে কি জন্য টার্গেট করা হচ্ছে সেটা বোঝাই কঠিন। কিন্তু এতে আন্দোলনে কোন প্রভাব পড়বে না। কারণ মানুষই এখন আন্দোলনকে এগিয়ে নিচ্ছে,” বলছিলেন সেলিমা রহমান।
কিন্তু নেতারা যাই বলুন দলের সব পর্যায়ের নেতাদের গ্রেফতারের বিষয়টি নিয়ে বিএনপির মধ্যে নানা ধরনের আলোচনা আছে। কেউ কেউ মনে করেন নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়টিকে নির্বিঘ্ন করতেই সব স্তরের নেতাদের আটক করা শুরু হয়েছে।
আবার কেউ কেউ মনে করেন সম্প্রতি বিএনপিরই দুজন সাবেক নেতা যে একটি নতুন দল গঠন করেছেন তার সাথেও এসব আটকের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে।
বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও যাতে বিচ্ছিন্নভাবে নেতারা অংশ নেন, সেজন্য গত নির্বাচনে ঢাকায় বিএনপির প্রার্থী রবিউল ইসলাম ও আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ারকে এবং কিশোরগঞ্জে শরিফুল আলমসহ সারাদেশে বিএনপির সম্ভাব্য অনেক প্রার্থীকে আটক করা হয়েছে।
আটকের নামে এসব নেতাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে পারে সরকারের তরফ থেকে করা হতে পারে-এমন আলোচনাও আছে বিএনপির ভেতরে।
যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পুলিশ হত্যা কিংবা প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মতো ঘটনা এবং ২৮শে অক্টোবরের সহিংসতার জন্যই বিভিন্ন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করছে পুলিশ।
“তাদের বিচার হতেই হবে। ২৮ অক্টোবর পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করেছে। এই অপরাধের ছাড় দেওয়া হবে না। সাংবাদিকদের পিটিয়েছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে। পুলিশ হাসপাতালে হামলা করেছে,” দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রোববার তিনি বলছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী থাকুন না বাইরে। দু-একজন কথা বলার লোক থাকা দরকার। তবে ইচ্ছা থাকলেও অনেক সময় গ্রেপ্তার করা যায় না। তাদের তো বিভিন্ন সারির নেতারা রয়েছেন”।
নতুন কর্মসূচির সন্ধান
বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন সামনে আন্দোলনের কর্মসূচি কী হতে পারে, সেজন্য দলীয় হাইকমান্ড থেকে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকদের চিন্তা করতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ হরতাল- অবরোধ ছাড়াও আর কী কর্মসূচি দেয়া যায় সেটি নিয়ে দলের বিভিন্ন স্তরে আলোচনা চলছে এখন।
নেতাদের ঘনিষ্ঠ কিছু সূত্র জানিয়েছে, হরতাল-অবরোধ চললেও সামনে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর, এমনকি নির্বাচনের পরেও আন্দোলন অব্যাহত রাখার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে-এমন বিবেচনা থেকেই আরও নতুন কর্মসূচির খোঁজ করছে বিএনপি। শনিবারের সহিংসতার একটি দৃশ্য।
আগে নির্বাচন কমিশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সচিবালয় ঘেরাও পালন করে হরতাল-অবরোধে যাওয়ার চিন্তা থাকলেও ২৮শে অক্টোবরের সহিংসতার পরদিন হরতাল এবং এরপর একদিন বিরতি দিয়ে তিন দিনের অবরোধ পালন করেছে বিএনপি।
চলতি সপ্তাহে রবিবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অবরোধের পর বুধ ও বৃহস্পতিবার হরতালের মতো কর্মসূচী ঘোষণার চিন্তা আছে দলের ভেতরে।
বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হতে পারে পরবর্তী সপ্তাহের প্রথম দুদিনের কর্মসূচি। এরপর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিনকে কেন্দ্র করে ধারাবাহিক কর্মসূচি আসার সম্ভাবনা থাকলেও সেগুলো কী ধরণের কর্মসূচি হতে পারে তা নিয়েই এখন বিশ্লেষণ করছেন দলের নেতারা।
আবার এতো দিন ধরে আন্দোলন আর দেশজুড়ে এতো নেতার গ্রেফতারের পর কর্মসূচি ঘোষণার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া মোকাবেলার মতো সাংগঠনিক সক্ষমতা দলটির থাকবে কি-না তাও চিন্তায় আছে অনেকের।
সেলিমা রহমান অবশ্য বলছেন যে, সরকার গ্রেফতার মামলা ও হামলা করে যে অবস্থা তৈরি করেছে তাতে এমন চিন্তা বা আলোচনা ওঠা স্বাভাবিক। কিন্তু তার দাবি এখন আন্দোলন শুধু বিএনপির বিষয় নয়।
“দেখুন আমাদের প্রত্যেকটি কর্মসূচি সফল হচ্ছে। কারণ সুযোগ পেলেই মানুষ আসছে। আমরা তো জনগণকেই সম্পৃক্ত করতে চেয়েছিলাম। তাই এটি ঠিক যে কঠিন অবস্থা চলছে, কিন্তু আন্দোলনও চলছে। যখন যা দরকার হবে বা জনগণ চাইবে দল তাই ঘোষণা করবে,” বিবিসি বাংলাকে তিনি বলছিলেন।
তবে দলের একটি অংশ চাইছে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করুক দল। কিন্তু এ নিয়ে দলের নেতাদের মধ্যে বিরোধ আছে । কারণ অনেকে আবার মনে করেন অসহযোগ আন্দোলনের মতো কর্মসূচি দেয়ার সময় এখনো আসেনি।
দলের আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল বলছেন, দলের কর্মসূচিগুলো ভেতরে -বাইরে সবার সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত করা হয় এবং লিয়াঁজো কমিটি আবার এসব কর্মসূচি নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলোর সাথে আলোচনা করে। এরপর দল একটি কর্মসূচি ঘোষণা করে।
“এটি আমাদের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। এখন চলমান আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণেও একই পদ্ধতিতে সবার মতামত নিয়ে সিদ্ধান্ত নিবে হাইকমান্ড। তবে সময়ের প্রেক্ষাপটে যে কর্মসূচির দরকার হবে এবং জনগণ যে কর্মসূচিতে অংশ নিবে সেটিই দেয়া হবে,” বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেছেন।
বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল অবরোধের ব্যানার টানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের গেটে।
বিএনপি’র দাবি ‘গ্রেফতার ঝড়’ চলছে, নতুন কর্মসূচির সন্ধান
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম ‘কর্মসূচিতে বৈচিত্র্য খুঁজছে বিএনপি’। খবরে বলা হচ্ছে, টানা অবরোধ বা হরতাল পালন করলে মানুষের মধ্যে একঘেয়েমি তৈরি হতে পারে। সাথে কর্মীদের মধ্যে আসতে পারে শৈথিল্য। আবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে-পরে কর্মসূচি তীব্রতর করতে চায় দলটি।
তাই এসব কর্মসূচির পাশাপাশি আর কী করা যায়, তা নিয়ে ভাবতে বলা হয়েছে বর্তমানে সক্রিয় আছেন বিএনপির এমন নেতাদের। নতুন কর্মসূচির বিষয়ে গত দুই দিন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
সেখানে অবরোধ রেখে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ভবন ঘেরাও, অবস্থান ও অসহযোগ আন্দোলনের মতো বিষয়ে প্রস্তাব এসেছে। তবে বেশির ভাগ নেতা অসহযোগের মতো কর্মসূচিকে উপযুক্ত মনে করছেন না বলে মত দিয়েছেন।
‘নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে ১১টি দলের অসন্তোষ’ দৈনিক সমকালের আজকের প্রধান শিরোনাম। খবরে বলা হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত সংলাপে অন্তত ১১টি দল নির্বাচনের বিদ্যমান পরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
এর মধ্যে কেউ কেউ আবার পরিবেশ সৃষ্টির আগে তফসিল ঘোষণা স্থগিত রাখারও পরামর্শ দিয়েছে।
তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, পরিবেশ অনুকূল বা প্রতিকূল যা-ই হোক না কেন, নির্বাচন আয়োজনের বিকল্প তাদের সামনে নেই।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিয়ে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলকে গতকাল শনিবার আমন্ত্রণ জানানো হলেও অংশ নিয়েছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ২৬টি দল।
এ আলোচনায় অংশ নেয়নি বিএনপি, সিপিবিসহ ১৮টি দল।
‘কৌশলী রাজনীতিতে দুদল’ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুগান্তরের শিরোনাম এটি। খবরে বলা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে উত্তপ্ত দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে ভিন্ন ভিন্ন কৌশল নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি।
ক্ষমতাসীনদের টার্গেট-সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন এবং বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলা করা।
অন্যদিকে সরকার পতনের একদফা আন্দোলন সফল করতে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি পরিস্থিতি বুঝে বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছে।
প্রথম আলোর একটি শিরোনাম ‘৮ দিনে সারা দেশে গ্রেপ্তার প্রায় ৮ হাজার নেতা–কর্মী‘। পত্রিকাটি বলছে, ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ কেন্দ্র করে সংঘাতের পর থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত আট দিনে সারা দেশে দলটির অন্তত ৭ হাজার ৮৩৫ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন।
তাঁদের মধ্যে দলের মহাসচিবসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা রয়েছেন অন্তত সাতজন। সাবেক সংসদ সদস্যসহ জেলা ও মহানগর পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতা রয়েছেন অন্তত অর্ধশতাধিক।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর থেকে পুলিশের ব্যাপক অভিযান শুরুর পর বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতার বেশির ভাগই আত্মগোপনে রয়েছেন।
ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের প্রধান শিরোনাম ‘Two-day blocade begings today‘ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আজ থেকে দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি।
খবরটিতে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়, গতকাল রাজধানীর পৃথক তিনটি স্থানে চারটি এবং নারায়ণগঞ্জে একটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশে হামলা, নেতাকর্মীদের হত্যা, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ আন্দোলনরত বিভিন্ন দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি-হয়রানি ও নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং চলমান এক দফা দাবিতে ফের টানা দ্বিতীয় দিনের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী।
‘এবারো আ’লীগের সাথেই নির্বাচনে যাচ্ছে জাতীয় পার্টি!‘ নয়াদিগন্তের শিরোনাম। খবরে বলা হচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে রাজপথ গরম থাকলেও নীরব ভূমিকায় গত দুই মেয়াদ সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের সরকারের সমালোচনা করলেও তার কমিটির কো-চেয়ারম্যানদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনে যেতে চায় বলে জানা গেছে।
‘১২ দেশে বাংলাদেশের পোশাক প্রত্যাহার’ আজকের পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এই খবরে বলা হচ্ছে, দেশে দেশে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশের কারখানায় তৈরি হওয়া বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাক।
‘স্বাস্থ্যঝুঁকির’ অজুহাতে এসব পোশাক বিক্রি বন্ধ করতে বাধ্য করা হচ্ছে বিক্রেতাদের। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২টি দেশে ঘটেছে এই ঘটনা।
সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে কানাডায়। দেশটির সরকার বাংলাদেশের কারখানায় তৈরি হওয়া জর্জ ব্র্যান্ডের ২ লাখ ১৬ হাজারের বেশি পোশাক ক্রেতাদের কাছ থেকে ফেরত নিতে বলেছে বৈশ্বিক চেইনশপ ওয়ালমার্টকে।
‘গার্মেন্টসে নাশকতায় ৩৬ জনের তালিকা প্রশাসনের কাছে’। ইত্তেফাকের খবরটিতে বলা হচ্ছে, রাজধানীর মিরপুর, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুরসহ ঢাকার আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে কিছু দিন ধরে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর চালিয়ে আসছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা।
একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি অনুসন্ধান করতে গিয়ে শ্রমিক নামধারী ৩৬ জনের তালিকা পেয়েছে।
তাদের মোবাইল ফোন রেকর্ডসহ বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তারা নিশ্চিত হয়েছে যে, এই ৩৬ জন নেতা বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি পুঁজি করে নানা উসকানি ও ইন্ধন দিয়ে গার্মেন্টস শিল্পের শ্রমিকদের আন্দোলনে নামিয়েছেন।
দেশের সরকারি সার কারখানা নিয়ে প্রথম আলোর প্রতিবেদন ‘চালুর আগেই ঋণ শোধের দায়’। এই খবরে বলা হচ্ছে, নরসিংদীতে নবনির্মিত ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা উৎপাদনে যাওয়ার আগেই ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু করতে হয়েছে সরকারকে।
কারখানাটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাসের ব্যবস্থাও নেই। পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর জন্য যমুনা সার কারখানা ২০২২ সালে বন্ধ করে নতুন কারখানায় গ্যাস দেওয়া হয়েছে।
সমস্যা আরও আছে। কারখানাটি থেকে সার সরবরাহের জন্য রেললাইন নির্মাণের কথা। কিন্তু রেললাইনের মূল কাজ এখনো শুরু হয়নি।
এরই মধ্যে ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা ১২ নভেম্বর উদ্বোধন করা হবে। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা।
‘তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বেশির ভাগই অলস বসে থাকতে পারে’ বণিক বার্তা শিরোনাম। পত্রিকাটি বলছে, দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার সাড়ে ২৭ শতাংশ জ্বালানি তেলভিত্তিক (ফার্নেস ও ডিজেল)। যদিও বর্তমানে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনে এ ধরনের জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সর্বোচ্চ ব্যবহার ২২ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সামনের বছর এ ব্যবহার ব্যাপক মাত্রায় কমে আসবে।
বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি না পাওয়া, ফার্নেস অয়েল আমদানিতে অর্থ সংকট ও উৎপাদন খরচ বিবেচনায় আগামী বছর তেলচালিত এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সিংহভাগই বসিয়ে রাখতে হতে পারে।
অলস বসিয়ে রাখা হলেও এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বিপুল পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি)।
দৈনিক সংবাদের শিরোনাম ‘উত্তরা-মতিঝিল মেট্রোরেলের যাত্রা শুরু’। খবরে বলা হচ্ছে, শনিবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে আগারগাঁও স্টেশনে সবুজ পতাকা নেড়ে মতিঝিল স্টেশন অভিমুখে মেট্রোরেল সার্ভিস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় নয় কিলোমিটারের প্রথম অংশ দশমাস আগে উদ্বোধন শেষে চালু করা হয়েছে। এখন প্রায় ১২ কিলোমিটার দ্বিতীয় অংশ উদ্বোধনে রাজধানীর উত্তরাকে মতিঝিলের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে মেট্রোরেল। ফলে প্রথম মেট্রোরেল পূর্ণতার দুয়ারে পৌঁছালো।
দেশ রূপান্তরের শিরোনাম ‘অন্তহীন বৈষম্য শিক্ষা ক্যাডারে‘। পত্রিকাটি বলছে, সরকার এখন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির (আইসিটি) ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও আইসিটি গুরুত্বপূর্ণ। গত কয়েকটি বিসিএসে আইসিটি বিষয়ে বেশি শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অথচ এ বিষয়টি ডিগ্রি বা অনার্স পর্যায়ের কলেজে নেই। ফলে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার পরও এ বিষয়ের শিক্ষকদের সহকারী অধ্যাপকের পরে আর কোনো পদ নেই।