২০১৫ সালের পর থেকে জাতিসংঘ কোনও দেশে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, কেবল জরুরি পরিস্থিতিতেই পর্যবেক্ষক পাঠায় জাতিসংঘ। বাংলাদেশে তেমন পরিস্থিতি যেহেতু নেই, সেহেতু পর্যবেক্ষক পাঠাবে কী পাঠাবে না, সে আলাপ তোলার সুযোগ নেই।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফানি ডুজারিক বলেন, “সুনির্দিষ্ট ‘ম্যান্ডেট’ ছাড়া আমরা এমন সিদ্ধান্ত খুব কম, খুবই কম নিই।’’ সেই সঙ্গে সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়—নির্বাচনে তারা পর্যবেক্ষক পাঠাবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অন্যান্য সংস্থার প্রতিবেদন দেখেছি। আমরা আবারও সংশ্লিষ্ট সব দলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—যাতে জনগণ অবাধে, স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। তা যেন হয়রানিমুক্ত হয়।’
কী প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত হয় জানতে চাইলে বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিসংঘের নির্বাচনি সহায়তা পলিসি একটি জটিল প্রক্রিয়া। নির্বাচন পর্যবেক্ষণসহ যেকোনও নির্বাচনে জাতিসংঘের সহযোগিতার জন্য বেশ কিছু জটিল ধাপ পেরোতে হয়। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বা সাধারণ পরিষদের ম্যান্ডেট লাগে, অথবা কোনও দেশ যদি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের কাছে নির্বাচনে সহযোগিতা চায়, সেক্ষেত্রে আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেলের অধীন ‘ইউএন ইলেক্টোরাল অ্যাসিস্ট্যান্স’ বিভাগ নির্বাচনে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেয়। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো একটি বিরল ঘটনা।
আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক মনে করেন, এ ধরনের প্রশ্ন তোলাটা উদ্দেশ্যমূলক। যেটা সাধারণত যে প্রতিষ্ঠানের করারই কথা না, সেটা নিয়ে অপ্রাসঙ্গিকভাবে প্রশ্ন করাটা থেকেই প্রশ্নকারীর উদ্দেশ্য বোঝা যায়। বিষয়টি এমন না যে জাতিসংঘ এই নির্বাচনে কোনও পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছে না। আসলে বিশেষ কোনও কারণ না থাকলে তারা এমন কিছু করার চিন্তাও করে না।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফজলুল হালিম রানা বলেন, ‘জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক পাঠায় এটাই ভুল ধারণা। বিশেষ পরিস্থিতিতে তারা যদি মনে করে কোথাও পর্যবেক্ষক পাঠানো দরকার, তাহলে তাদের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ম্যান্ডেট নেওয়ার বিষয় আছে। তেমন কোনও এজেন্ডার মধ্য দিয়ে যেহেতু সংস্থাটি যায়নি, সেহেতু নিশ্চিত হয়ে বলা যায়, জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বাস্তবতা নেই। তারা পর্যবেক্ষক পাঠানোর এখতিয়ারই রাখে না।’