ঢাকাঃ দেশের নদী দখল নিয়ে মন্ত্রী-মেয়রসহ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের মনজুর আহমেদ চৌধুরীকে ‘জনস্বার্থে’ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশিষ্টজনরা। টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন এডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার দুর্বৃত্তদের প্রোটেকশন দিয়ে যাচ্ছে। ত্বত্তাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেস্টা সুলতানা কামাল আরও বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে মনজুর আহমেদ চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়া এই বার্তাই দিচ্ছে যে, বাংলাদেশে কোনো বাক স্বাধীনতা নেই। দুর্নীতি দমনে সরকার যে জিরো টলারেন্সের কথা বলে, সেটাও একেবারেই ফাঁকা বুলি। আসলে সরকার চায় না যে দুর্নীতি দমন হোক। বাকস্বাধীনতা থাকুক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাতেই দুর্নীতি অনেক বাড়ছে। মনজুর আহমেদের ঘটনা এমন আরেকটি উদাহরণ তৈরি করল। কোনো জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তদন্তসাপেক্ষে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের দায় তারও থাকা উচিত। কিন্তু কোনোক্ষেত্রেই তো সেটা হচ্ছে না। বরং যিনি অভিযোগ তুলছেন তার ওপরেই খড়গ নেমে আসছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে সরকারের কোনো আন্তরিকতা নেই এবং যারা হুইসেল ব্লোয়ার, যারা এটা নিয়ে কথা বলছে, তাদের প্রোটেকশনের ব্যাপারেও সরকার আন্তরিক না। বরং সরকার দুর্বৃত্তদের প্রোটেকশন দিয়ে যাচ্ছে। এটা খুবই ভয়ানক, শঙ্কাজনক।
এই বক্তব্যের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘কোনো জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তদন্তসাপেক্ষে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের দায় তারও থাকা উচিত। কিন্তু কোনোক্ষেত্রেই তো সেটা হচ্ছে না। বরং যিনি অভিযোগ তুলছেন তার ওপরেই খড়গ নেমে আসছে।’মনজুর আহমেদ চৌধুরী
মনজুর আহমেদকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় বাক স্বাধীনতা ও দুর্নীতি দমন—এ দুটো বিষয়ের ওপরেই বড় আঘাত এসেছে বলেও মন্তব্য করেন সুলতানা কামাল। বলেন, ‘দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে সরকারের কোনো আন্তরিকতা নেই এবং যারা হুইসেল ব্লোয়ার, যারা এটা নিয়ে কথা বলছে, তাদের প্রোটেকশনের ব্যাপারেও সরকার আন্তরিক না। বরং সরকার দুর্বৃত্তদের প্রোটেকশন দিয়ে যাচ্ছে। এটা খুবই ভয়ানক, শঙ্কাজনক।’
এ বিষয়ে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদারের বক্তব্য, ‘রংডুয়ার্স যারা, তাদের এনকারেজ করা হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করছে তাদের রেড সিগন্যাল দেখানো হচ্ছে। আমাদের গভর্ন্যান্সের অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে।
‘এমনিতেই গুড গভর্ন্যান্স ছিল না। এর ভেতরেও যে দুই-চারজন সাহসী মানুষ ছিলেন তারাও নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’
সূত্র: ডেইলি স্টার বাংলা