দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘এসব মামলা সরকার করছে না, জনগণের জায়গা থেকে করা হচ্ছে। ব্যক্তিগত শত্রুতার জায়গা থেকেও করা হচ্ছে। এই মামলাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পর্যালোচনা ও তদন্ত করা হবে। অভিযোগ না থাকলে মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হবে।’
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সাংবাদিক ফোরামের সঙ্গে বৈঠক করেন নাহিদ ইসলাস।
ওই বৈঠকের আলোচ্য বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি, যদি কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ থাকে বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয় থাকে, তথ্য মন্ত্রণালয়ে তাঁর বিষয়ে বিস্তারিত পাঠাবেন। আমরা দেখব। কেবল সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও কবি পরিচয়ে কেউ রেহাই পাবেন না। যারা ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, বৈধতা উৎপাদনে কাজ করেছেন, লেখনী ও মতামতের মাধ্যমে জনমত তৈরি করেছেন, গণহত্যার পক্ষে কাজ করেছেন, উসকানি দিয়েছেন, তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে।’
সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার বিষয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা ঠিক, জননিরাপত্তা নিশ্চিত, জরুরি পরিস্থিতিতে দেশ পুনর্গঠনে সেনাবাহিনীকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে পুলিশ বাহিনীকে সম্পূর্ণ সংস্কার করে আরও শক্তিশালী ও আস্থার জায়গায় নিয়ে মাঠে ফিরিয়ে আনতে হবে। এ কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হচ্ছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাক্টচেকিং নিয়ে বিভিন্ন অংশীজন ও মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। কীভাবে ফ্যাক্টচেকিং বিষয়টি আরও শক্তিশালী করা যায়, সেটা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাতে এই ধরনের গুজবের সত্যাসত্য যাচাই করে মানুষের কাছে সত্য তুলে ধরা যায়, মানুষ যাতে গুজব ও মিথ্যায় প্রভাবিত না হয়, সে জন্য আমরা ফ্যাক্টচেকিং নিয়ে ভাবছি।’
সেন্সর শব্দটি বাদ দিয়ে সার্টিফিকেশন বোর্ড নামে প্রজ্ঞাপন করা হবে- তথ্য উপদেষ্টা
সিনেমা ব্যবসায়ীদের যেন আর্থিক ক্ষতি না হয়, সেজন্য আপদকালীন সময়ের জন্য একটা সেন্সর বোর্ড তৈরি করা হয়েছিলো। এটি এখন “বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড ” নামকরণ হবে।
আজ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ড ও জুরি বোর্ডের মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম একথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, সেন্সরবোর্ড এর কমিটিতে সেন্সরবিরোধী মানুষদেরই আমরা আহবান করেছি।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, আইন ও বিধি নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে। সেন্সর বোর্ড নিয়ে একটি গেজেট হয়েছিলো। কিন্তু তার বিধিমালা ছিলো না। এক্ষেত্রে এখন সেন্সর শব্দ বাদ দিয়ে ২০২৩ সালের আইন দ্রুততম সময়ে প্রজ্ঞাপন দিয়ে কার্যকর করা হবে।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, সিনেমা জগতে প্রচুর সিনেমা এখনো রিলিজ দেয়া বাকি আছে। তাই সিনেমা রিলিজের সুবিধার্থে দ্রুততম সময়ে আইন নিয়ে কাজ করা হবে, যা প্রজ্ঞাপনের সাথে সাংঘর্ষিক হবে না।
তিনি আরো বলেন, এ আইনটি করার সময় অংশীজনের সাথে আলোচনাপূর্বক পর্যালোচনা করে সার্বিক প্রস্তাবনা নিয়ে নতুনভাবে কাজ করা হবে। ২০২৩ সালের আইনের বিধি দিয়েই সার্টিফিকেশন বোর্ড তৈরি করা হবে।
মতবিনিময় সভার এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ড এবং জুরি বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।