দেশে বেশি সংসার ভাঙছে পরকীয়ায়, সিলেটে ও ঢাকায় স্বামী বিদেশ থাকায়

91

অনলাইন ডেস্ক:

দাম্পত্য বিচ্ছেদের হারে শহর ও পল্লী অঞ্চলের মধ্যে সামান্য পার্থক্য রয়েছে। প্রতি হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে শহরে দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের হার ০ দশমিক ২৫ জন। পল্লী অঞ্চলে এটির হার ০ দশমিক ৩০ জন। ৮টি বিভাগের মধ্যে দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের হার সবচেয়ে বেশি রাজশাহীতে, এ বিভাগে দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের হার প্রতি হাজারে ০ দশমিক ৩৭ জন।

অন্যদিকে সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে এ হার সবচেয়ে কম, মাত্র ০ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে দেশে যে দাম্পত্য বিচ্ছেদ হচ্ছে তার প্রধান কারণ পরকীয়া এবং দ্বিতীয় কারণ শারীরিক অক্ষমতা। পরকীয়ার কারণে বেশি সংসার ভাঙছে ঢাকা বিভাগের অন্যদিকে স্বামী বিদেশ থাকায় বেশি সংসার ভাঙছে সিলেটে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২২ (এসভিআরএস) এ চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এটি সম্প্রতি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে সংস্থাটি।

বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাক প্রসঙ্গে এসভিআরএস প্রকল্পের পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বাংলাদেশেই পরকীয়ার কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ বেশি হচ্ছে। মানুষের বিশ্বাস-মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণেই এটা ঘটছে।

এছাড়া সিনেমা, নাটক ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পরকীয়া এমনভাবে দেখানো হচ্ছে মনে হচ্ছে পরকীয়া স্বাভাবিক ঘটনা। স্বামী দীর্ঘদিন বিদেশ থাকায় সিলেটে বিভাগে বিবাহ বিচ্ছেদ বেশি ঘটছে। স্বামী বিয়ে করে দীর্ঘদিন স্ত্রীকে বিদেশে নেয় না। স্ত্রী দেশে দীর্ঘদিন একা থাকায় তাদের মধ্যে একধরনের হতাশা কাজ করে। এই কারণেই সিলেট বিবাহ বিচ্ছেদ বেশি হচ্ছে।

প্রতিবেদনে উঠে এসছে, ২০২২ সালে তালাক ও দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের পেছনের কারণসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তালাক ও দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে পরকীয়া, যা ২২ দশমিক ৬ শতাংশ।

এরপরই রয়েছে দাম্পত্য জীবন পালনে অক্ষমতার কারণ যা সংসার ভাঙনের জন্য ২২ দশমিক ১ শতাংশ দায়ী। অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে ভরণপোষণের ব্যয় বহন করতে অক্ষমতা-অস্বীকৃতি ১০ দশমিক ৬ শতাংশ ও পারিবারিক চাপকে ১০ দশমিক ২ শতাংশ দায়ী করা হয়েছে।

পল্লী- শহরের ক্ষেত্রে তালাক/দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের কারণগুলোর মধ্যে কয়েকটি ক্ষেত্রে ব্যবধান উল্লেখযোগ্য; এর মধ্যে রয়েছে জীবনযাত্রার ব্যয় বহন করতে অক্ষম-অস্বীকার করা, যৌনমিলনে অক্ষমতা-অনীহা এবং বহুবিবাহ।

পরকীয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি তালাক-দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। সংসার বিচ্ছেদের জন্য দায়ীর হার ২৮ দশমিক ৩ শতাংশ, এরপরের অবস্থান রংপুর বিভাগের ২৬ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ।

প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, স্বামী দীর্ঘদিন বিদেশে থাকায় তালাক-দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের ঘটনা ঘটার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে সিলেট বিভাগে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। শারীরিক মানসিক নির্যাতনের কারণে ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ দায়ী সংসার বা টেকায়। শারীরিক/মানসিক নির্যাতনের কারণে তালাক/দাম্পত্য বিচ্ছিন্নের ঘটনা ঘটছে। উচ্চতর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সম্পদশালী হওয়া উভয় ক্ষেত্রেই একটি বিপরীতমুখী সম্পর্ক দেখা দিচ্ছে। এর জন্যও দেশে অহরহ সংসার ভাঙছে।

বিবাহের অনুপাত গত ১৭ বছরে উল্লেখযোগ্যহারে তালাক বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৬ সালে প্রতি হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে এর অনুপাত ছিল ১২ দশমিক ৪ যা ২০২২ সালে ১৮ দশমিক ১ এ উন্নীত হয়েছে। এ সময়ের ব্যবধানে সূচকটিতে উল্লম্ফন ঘটেছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। ২০০৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে পুরুষ ও নারী উভয়ের মধেই বিবাহের হার বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে তালাকের প্রবণতা।

পূর্বের খবর২২ পেনাল্টির পর টসে শিরোপা হাতছাড়া বাংলাদেশের
পরবর্তি খবরকিয়ারাকে নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে কোথায় যাচ্ছেন সিদ্ধার্থ