নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সারাদেশের নগর দরিদ্রদের ৫২ শতাংশের কোনো জন্ম নিবন্ধন ও ২৩ শতাংশের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত। সোমবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘বাংলাদেশে নগর দারিদ্র্য: ভূমি, অভিবাসন, মৌল সেবা’ শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধের ফলাফল নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এ কথা বলেন তিনি। সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) এবং এইচডিআরসি।
সেমিনারে বস্তিবাসীদের দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে আবুল বারকাত বলেন, ‘বস্তি অঞ্চলে বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নেই বললেই চলে। নানা যোগসাজশে যা আসে তার মূল্য দিতে হয় অনেক বেশি। আমরা যে মূল্য দেই তা থেকেও বেশি। সরকারি হিসেব মতে নগরের গড়ে ৬৫ শতাংশ মানুষ উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা পায়৷ কিন্তু নগর দরিদ্রদের মধ্যে এ হার মাত্র ১৬ শতাংশ। নিরাপদ পানিতে অভিগম্যতা দেশে শতভাগ বলা হচ্ছে সেখানে নগর দরিদ্রদের মধ্যে এই হার মাত্র ৩৩ শতাংশ। তাও, এই সংখ্যার মধ্যে সাপ্লাই এর পানি অন্তর্ভুক্ত। আর সাপ্লাই এর পানি কেমন তা আমরা সকলেই জানি।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে মানবাধিকার কর্মী ও মানবাধিকার সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, আমাদের বস্তিবাসীদের পুষ্টি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ যেখানেই আমরা হাত দিয়েছি প্রতিটি স্তরেই তাদের একটি বেদনাদায়ক চিত্র ফুটে উঠেছে। গবেষণা থেকে বুঝতে পেরেছি বস্তিবাসীরা ক্রমাগত দরিদ্রায়নের মধ্যে বসবাস করছে। শুধু তাই না; আমরা যে মৌলিক পাঁচটি অধিকারের কথা বলি তা থেকেও বস্তিবাসীদের পেছনে ফেলে রেখেছে। তাদের মৌলিক অধিকারও আমরা নিশ্চিত করতে পারছেনা। তাদের শুধু পেছনে ফেলে রাখা হয়নি তাদেরকে পেছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন শেষে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন– ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিক উজ জামান, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, এএলআরডি এর নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদাসহ প্রমুখ।