২০২৪ সালের গোড়ার দিকে, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান। আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রথম ধাপে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ (টিওটি) কার্যক্রম উদ্বোধন করে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে সেটি মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। এ সময় নির্বাচন কোনো সহজ কর্ম বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে আমরা এখনো ভোটগ্রহণের তারিখ ঠিক করিনি।আজকের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়ে গেল।’
আজ শনিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রথম ধাপে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ (টিওটি) কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ সময় আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে অনুষ্ঠানে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।
ইসি আনিছুর রহমান বলেন, ‘আপনারা যারা এখান থেকে প্রশিক্ষণ নেবেন তারা প্রথমে অঞ্চলভিত্তিক প্রশিক্ষণ করাবেন। এরপর অঞ্চলে যারা প্রশিক্ষিত হবেন তারা জেলা পর্যায়ে এবং জেলার প্রশিক্ষিতরা উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেবেন। আমি নিজেও দুবার সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছিলাম।’
প্রিজাইডিং অফিসারের ক্ষমতা ভোটের দিনে সবচেয়ে বেশি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘না জানার কারণে অনেকে বিষয়টা জানেন না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলেও করণীয় আছে, আইনে প্রিজাইডিং অফিসারের ভোট বন্ধ করারও ক্ষমতা দেওয়া আছে। সে সময় ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া থাকে, তাও কাজে লাগানোর সুযোগ আছে।’
নির্বাচন নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘আমরা যখন চাকরিতে ঢুকেছি তখন নির্বাচনে কোনোরকম প্রশিক্ষণই হতো না। কিন্তু নির্বাচন তো ঠিকই করতাম। তারপরও নির্বাচন নিয়ে কোনোরকম কথাবার্তা হতো না। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে ততই সবকিছু জটিল হচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনও জটিল হয়ে গেছে। এই জটিল হওয়ার কারণে এত আইনকানুন ও এত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। আপনাদের কাছে বেশি কথা না বলাই ভালো। নিজে পড়লেই জানা যায় সবকিছু।’
নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আপনারা আইনকানুনগুলো ভালো করে দেখে নেবেন, পড়ে নেবেন। নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। ’
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. আহসান হাবিব খান বলেন, কঠিন প্রশিক্ষণ, সহজ যুদ্ধ। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার জন্য সকলের সহযোগিতা দরকার। যত সুন্দরভাবে প্রশিক্ষণ হবে, ততই একটা সুন্দর নির্বাচন হবে। আমরা দায়িত্ব নিয়ে ১ হাজার নির্বাচন সুন্দর ও অবাধভাবে করেছি। কোনো কথা ওঠেনি সেসব নির্বাচন নিয়ে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ভূমিকা অনেক।
অন্যদিকে ভোট সুষ্ঠু করার জন্য আইনে প্রিজাইডিং অফিসারদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, ‘ভোটকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য শুধু সুষ্ঠু নয়, অংশগ্রহণমূলক ভোট হতে হবে। জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারলেই ভোট শতভাগ সুষ্ঠু হবে।’
উল্লেখ্য, শনিবার থেকে শুরু হওয়া নির্বাচনী কর্মকর্তাদের এই প্রশিক্ষণ ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। ইসির প্রশিক্ষিত সাড়ে তিন হাজার এক্সপার্ট মাঠ পর্যায়ের প্রায় ৯ লাখ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন।