আন্ত্জাতিক ডেস্ক
গাজা যুদ্ধ ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ ইরান। মূলত ইরাকের কুর্দি অঞ্চলে অবস্থিত ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এবং উত্তর সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) স্থাপনা নিশানা করে হামলার দাবি করেছে ইরানি ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস বা আইআরজিসি।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) গভীর রাতে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালায় আইআরজিসি। হামলার শিকার স্থাপনার মধ্যে ইরাকে অবস্থিত ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সদর দপ্তর রয়েছে বলেও দাবি করেছে তেহরান। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু।
আইআরজিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইরাকে অবস্থিত মোসাদের সদর দপ্তর এবং ইরানবিরোধী কার্যক্রম পরিচালিত হয় এমন কয়েকটি স্থাপনা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিবৃতির অন্য অংশে আইআরজিসি বলেছে, তারা ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলে মোসাদের সদর দপ্তর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং এটিকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
এদিকে জানুয়ারির প্রথম দিকে ইরানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর কেরমানে বড় একটি সমাবেশে জোড়া বোমা হামলা হয়। ওই হামলায় নিহত হন অন্তত ৯৩ জন। দিনটি ছিল ইরানের সাবেক শীর্ষ সামরিক কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেইমানির মৃত্যুর চতুর্থ বার্ষিকীর দিন।
এই জোড়া হামলার প্রতিশোধ নিতে উত্তর সিরিয়ায় বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কথা জানিয়েছে আইআরজিসি। এসব হামলায় ইসলামিক স্টেটসহ (আইএস) ইরানে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের স্থাপনা ধসে গেছে।
আলজাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে ইরাকের আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি অঞ্চলের রাজধানী ইরবিলে অন্তত আটটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইরানের এই হামলার ব্যাপকতা এত বেশি ছিল যে, হামলার জেরে ইরবিল বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
হামলায় ইসরায়েলি-আমেরিকান এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইসরায়েলি স্বার্থ রক্ষার অভিযোগ করেছে ইরান।
ইরানের এসব হামলার নিন্দা জানিয়েছে ইরাক। ইরানি হামলার প্রতিবাদে তেহরান থেকে তার রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাগদাদ। এ ছাড়া বাগদাদে নিযুক্ত ইরানের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করেছে ইরাকি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরায়েলের তরফ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।