কোটা আন্দোলনঃ অবরুদ্ধ ঢাকা

85

ঢাকাঃ সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রাজধানী জুড়ে ব্লকেডে গতকাল অচলাবস্থা তৈরি হয়। বিকালে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে শিক্ষার্থীরা অবরোধ করায় বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। গতকাল ঢাকায় প্রথম বারের মতো এক ঘণ্টা রেলপথ অবরোধ করা হয়। এতে সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। রাত সাড়ে আটটার পর শাহবাগের সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সারা দেশে অনলাইন ও অফলাইনে প্রচারণা চালানো হবে। কোটা বাতিলের পরিপত্র ৩দিনের মধ্যে বহাল করতে আল্টিমেটাম দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আলোচনা করে মঙ্গলবার বিকালের মধ্যে বুধবারের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এদিন সারা দেশে সর্বাত্মক ব্লকেড কর্মসূচি দেয়া হতে পারে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।

লাগাতার আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনে গতকাল অবরোধকারীরা বাড়িয়েছে ব্লকেডের আকার। শাহবাগ থেকে ফার্মগেট, গুলিস্তান, পল্টন, মৎস্য ভবন, চানখাঁরপুল, নিউমার্কেট, সায়েন্স ল্যাব, কাঁটাবন, আগারগাঁওসহ ঢাকার ব্যস্তময় অধিকাংশ সড়ক ছিল অবরোধকারীদের দখলে।

বন্ধ করে দেয়া হয় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যান চলাচল। এক ঘণ্টা বন্ধ ছিল ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ। বিকাল ৩টা থেকে শুরু হওয়া অবরোধে সড়কে সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ জট সৃষ্টি হয়। তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। এ ছাড়াও পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সারা দেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ধর্মঘট পালন করছেন। রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে অবরোধ তুলে নিয়ে আন্দোলনকারীরা ৩দিনের আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ৬৪ জেলায় ব্লকেডের ঘোষণা দেন তারা। 

 

mzamin

 

নিউজ২১ডেস্কঃ ঢাকা ছাড়াও কোটা বিরোধীরা এদিন অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এ সময় তারা সড়ক, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এদিকে একদফার দাবি চলমান আন্দোলন আরও কঠোর করার লক্ষ্যে আন্দোলনকারীরা ৬৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ ও আসিফ মাহমুদ। রাতে শাহবাগে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনকারীরা আজ গণসংযোগ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। একই  সঙ্গে চলমান ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচিও চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, অর্ধবেলা ব্লকেডে আমরা থেমে থাকবো না। আমরা একটি সর্বাত্মক ব্লকেডের পরিকল্পনা করছি। এ জন্য আগামীকাল (আজ) আমরা সারা দেশে ও ঢাকা শহরে শিক্ষার্থী-প্রতিনিধিদের সঙ্গে সমন্বয় ও গণসংযোগ করবো। পরে বুধবার আমরা কঠোর কর্মসূচি দেবো। কিন্তু আমাদের যে চলমান ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘটের কর্মসূচি চলবে। আমরা ব্লকেড প্রত্যাহার করছি না। বরং সর্বাত্মক ব্লকেডের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) বিকালে অনলাইনে সংবাদ সম্মেলন করে আমরা আমাদের বুধবারের কর্মসূচি জানিয়ে দেবো। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ব্লকেডের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিন। তিনি বলেন, চার দফা দাবির পরিবর্তে একদফা দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। যেখানে আদালতের কোনো এখতিয়ার নেই। এটা করার দায়িত্ব কেবল নির্বাহী বিভাগ ও সরকারের। ফলে বল এখন সরকারের কোর্টে। এখন আর আদালত দেখিয়ে কোনো লাভ নেই।

সরকারই ঠিক করতে পারে, এই আন্দোলনের গতিপথ কী হবে। নাহিদ বলেন, আমরা ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করেছি। চেয়েছিলাম এই আন্দোলন যাতে দীর্ঘমেয়াদি না হয়। তাই এতদিন আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক কমিটি ঘোষণা করিনি। কিন্তু দাবি আদায় না হলে আমরা মাঠে থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সারা দেশে প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা এই টিম গঠন করেছি। আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা আজকে মন্ত্রীর কথায় মর্মাহত হয়েছি। বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগের মধ্যে এনে আমাদের হাইকোর্ট দেখানো হচ্ছে, অন্ধকে হাইকোর্ট দেখানো হচ্ছে। আপনারা আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেবেন না। আমরা ফিরে যাওয়ার জন্য রাজপথে আন্দোলনে নামি নাই। আমরা দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত এই আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আপনারা দায়িত্বশীলরা সহজ বিষয়কে ঘোলা করছেন। আপনাদের জন্যই শিক্ষার্থীদের মাঝে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। আপনাদের ওপর আমরা আস্থা হারাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, শিক্ষার্থীদের যেকোনো ক্ষতির দায়ভার আপনাদের নিতে হবে। কেউ আহত হলে অসুস্থ হলে তার দায়ভার আপনাদের ঘাড়ে বর্তাবে। আমরা রাস্তায় থাকবো আর আপনারা এসে রুমে বসে রায় দেবেন তা আমরা মেনে নেবো না। অতি দ্রুত আপনারা আমাদের সঙ্গে সমন্বয় না করেন তাহলে বুঝবো আপনারা ছাত্র সমাজের পার্লস বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুরের পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অবস্থান নেয় মধুর ক্যান্টিনে। তবে তারা আন্দোলনকারীদের কোনো বাধা দেয়নি। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে শিক্ষার্থীদের বিশাল মিছিল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মধুর ক্যান্টিন, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, টিএসসি হয়ে শাহবাগে গিয়ে অবস্থান নেয়। শাহবাগ থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ইন্টারকন্টিনেন্টাল, বাংলামোটর, কাওরান বাজার মোড় অবরোধ করে। এ ছাড়াও পৃথক পৃথক গ্রুপে ভাগ হয়ে কাঁটাবন ও মৎস্য ভবন মোড়েও অবস্থান নিয়ে কোটা বিরোধী স্লোগান দেন তাগা

এ ছাড়াও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী চাঁনখারপুল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গুলিস্তান মোড়, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সায়েন্স ল্যাব, ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট, তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা ফার্মগেট ও শেকৃবি শিক্ষার্থীরা আগারগাঁও এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ কাওরান বাজার এফডিসি গেটের রেললাইনে কাঠের বড় টুকরো ফেলে অবস্থান নেন। এ সময় তারা কোটা বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের এ অবরোধ চলে এক ঘণ্টা। এরপর রাত ৮টার দিকে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা খায়রুল কবির বলেন, সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করেন। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

এদিকে বাংলা ব্লকেডে পুরো রাজধানীতে স্থবিরতা তৈরি হয়। সড়কে সড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে অফিস শেষে ঘরমুখো কর্মজীবী ও রোগীদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। ডিএমপি’র ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে জানান হয়, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় হানিফ ফ্লাইওভারের মুখে নিমতলী, পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়, ইউবিএল (পল্টন) ক্রসিং, আগারগাঁও ক্রসিং, শাহবাগ, জিরো পয়েন্ট, ইন্টারকন্টিনেন্টাল, পুলিশ ভবন ক্রসিং (মিন্টো রোড), বাংলামোটর, সোনারগাঁও ক্রসিং এবং ফার্মগেট ক্রসিংয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীরা অবস্থান করছে। কোনো সংঘাত না হলেও রাস্তায় ভয়াবহ যানজট তৈরি হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ অবশ্য বিভিন্ন বিকল্প সড়কে গাড়িগুলোকে ঘুরিয়ে দেন। আগারগাঁও ক্রসিংয়ে আন্দোলনকারীরা বসার পর পুলিশ আবহাওয়া অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে গাড়িগুলোকে ঘুরিয়ে মিরপুর রোড হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিলো।

আড়াই ঘণ্টা গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট অবরোধ জবি শিক্ষার্থীদের: কোটা বাতিলের একদফা দাবিতে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট অবরোধ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময়ে জবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অংশ নেয় সরকারি কবি নজরুল কলেজ ও সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের আন্দোলনকারীরা। গতকাল বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে গুলিস্তানের অভিমুখে রওনা হলে পুলিশ তাঁতীবাজার মোড়, বংশাল, ফুলবাড়িয়াতে ব্যারিকেড দেয়। এসময় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে ছত্রভঙ্গ হয়ে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে আড়াই ঘণ্টা অবস্থান নেয়ার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় গুলিস্তান ত্যাগ করেন তারা। এ সময় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গুলিস্তানগামী সকল যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় সচিবালয় সহ আশপাশের এলাকার সড়কগুলোতে।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে জাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ: সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগ বহাল রাখার দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের উভয় লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক (ডেইরি গেইট) সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে তারা। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই আন্দোলন চলে। এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গিয়ে শেষ হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, আমাদের দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

চবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ: রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-কক্সবাজারগামী পর্যটন এক্সপ্রেস আটকা পড়ে। আধা ঘণ্টা পর রেলপথ অবরোধ তুলে নিলে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। গতকাল বিকাল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম ষোলশহর রেলস্টেশন অবরোধ করেন তারা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে দুপুর আড়াইটার দিকে শাটলে চড়ে ১৬ কিলোমিটার দূরে ষোলশহর রেলস্টেশনে পৌঁছান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ষোলশহর স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদীন বলেন, শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করেছে। এ কারণে ট্রেন আটকে যায়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ কুবি শিক্ষার্থীদের: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এতে ব্যস্তময় মহাসড়কটিতে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। বিকাল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে জড়ো হয় তারা।

রাবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ: সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে রেললাইন অবরোধ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ছাড়া রাজশাহীর সঙ্গে অন্যসব জেলার রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের পাশের রেললাইন অবরোধ করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের সমন্বয়ক আমানুল্লাহ আমান বলেন, চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে রেলপথ অবরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা আনুষ্ঠানিকভাবে বর্জন করেছে। চলেনি ক্যাম্পাসের কোনো বাস। সব গ্রেডে, সব ধরনের অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংসদে আইন পাস না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

বাকৃবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ: একই দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা রেলপথ অবরোধ করেছে। এর আগে দুপুর ১২টায় বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মুক্তমঞ্চে সমবেত হন। এরপর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আব্দুল জব্বার মোড়ে অবস্থিত রেললাইনে চলমান ট্রেন অবরোধ করে।

শেকৃবি শিক্ষার্থীদের আগারগাঁও মোড় অবরোধ: একদফা দাবিতে রাজধানীর আগারগাঁও মোড় অবরোধ করেছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ এবং অবরোধের মাধ্যমে দাবি আদায়ের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা আগারগাঁও মোড়ে গিয়ে রাস্তা অবরোধ করেন। এতে মিরপুর-ফার্মগেট এবং মহাখালী-শিশুমেলা সড়ক দুই ঘণ্টার বেশি সময় অবরুদ্ধ থাকে। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল।

শাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, ব্লকেড: কোটা প্রথার বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অবরোধ করা হয়েছে সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক। গতকাল বিকাল ৪টার দিকে তৃতীয় দিনের মতো এ সড়ক অবরোধ করা হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। শিক্ষার্থীরা বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থা থাকতে পারে না। ছাত্রসমাজ কোটাবিরোধী আন্দোলনে মাঠে নেমেছে এবং কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

দুই ঘণ্টা অবরোধ কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক: একদফার দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো আন্দোলন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে দুই ঘণ্টা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। এ সময় বিভিন্ন প্রতিবাদী গান, নাটিকা ও কবিতা আবৃত্তি করতে দেখা যায় তাদের। এদিকে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

 

পূর্বের খবরদেশে থ্যালাসেমিয়া বাহকের হারের উদ্বেগ কতটা?
পরবর্তি খবরআজ ‘এন্ড্রু কিশোরের’ চতুর্থ প্রয়াণ দিবস