কুড়িগ্রামে আ.লীগ নেতাকে পিটিয়ে মারলো ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা

98

অনলাইন ডেস্ক:

কুড়িগ্রাম সদরে সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পিটুনিতে কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম সোয়ান (৪৪) মারা গেছেন।

শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা সদরের খলিলগঞ্জ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজভি কবির চৌধুরী বিন্দু ও তার অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মীদের অভিযুক্ত করেছেন সোয়ানের বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা।

কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহত শরিফুল ইসলাম সোয়ান জেলা শহরের ঘোষপাড়ার আমজাদ হোসেন বুলুর ছেলে। তিনি একই সাথে জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা রেজভি কবির চৌধুরী বিন্দু জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন নয়নের অনুসারী। তিনি কুড়িগ্রাম পৌর এলাকার খেজুরেরতল (চৌধুরী পাড়া) গ্রামের বিপুল চৌধুরীর ছেলে।

সোয়ানের সাথে প্রাইভেটকারে থাকা তার বন্ধু রেদওয়ান মাহমুদ শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল চত্বরে সাংবাদিকদের জানান, তিনি সহ আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম সোয়ান ত্রিমোহনী বাজার এলাকা থেকে প্রাইভেটকার যোগে শহরের দিকে আসছিলেন। সোয়ান প্রাইভেট কারের পেছন ছিটে বসে ছিলেন। এসময় খলিলগঞ্জ বাজার এলাকার অভিনন্দন কনভেনশন সেন্টারের সামনে তিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী বহনকারী একটি মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। মোটরসাইকেলে থাকা ছাত্রলীগের দুই কর্মী ছিটকে পড়ে আহত হলে সোয়ান ও তার বন্ধু আহতদের অটোরিকশা যোগে হাসপাতালে পাঠান। খবর পেয়ে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বিন্দু ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাড়ি সহ সোয়ান ও তার বন্ধুদের আটক করেন। সোয়ান নিজের পরিচয় দিলে বিন্দু ও তার কর্মীরা সোয়ানকে পেটান। সোয়ান ঘটনাস্থলে অসুস্থ্য হয়ে পরেন। বিন্দু প্রাইভেটকার আটক করতে চাইলে সোয়ানের বন্ধুরা এতে বাধা দেন। এসময় সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিজভী কবির চৌধুরী বিন্দু নিজেই প্রাইভেটকার চালিয়ে সোয়ানকে নিয়ে হাসপাতালে রওয়ানা দেন। হাসপাতালে পৌঁছার পর বিন্দু আবারও সোয়ানকে পেটান। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক সোয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা সোয়ানের মৃত্যুতে শোকের সাথে ক্ষোভে ফুসে উঠেছে তার বন্ধু ও রাজনৈতিক সহকর্মীরা। তারা অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা বিন্দুর ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ব্যক্তিগত কাজে আমি ঢাকায় রয়েছি। ঘটনা জেনেছি। বিন্দুর সাথে একবার কথা হয়েছে। সে নিজের দায় অস্বীকার করেছে।’

ছাত্রলীগ জড়িত থাকার প্রশ্নে সাদ্দাম বলেন, ‘ঘটনায় বিন্দু কিংবা ছাত্রলীগের কোনও নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনানুগ ব্যবস্থাসহ সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। যেই জড়িত হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পূর্বের খবরহাতকড়া উদ্ধার হলেও জুয়ারিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ
পরবর্তি খবরবইমেলায় ফেরদৌস হাসানের “ডাক দিয়ে যায়” উপন্যাস মোড়ক উন্মোচিত