২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৩৩টি আসন জয় লাভ করে; আর, বিএনপি ৩০টি আসনে জয়লাভ করে। শেখ হাসিনা বলেন, “অনেকেই নির্বাচনে অংশ নিতে চান না। এটা স্বাভাবিক, যারা মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিলো, তাদের তো নির্বাচনে অংশ নেয়ার কোনো আকাঙ্খা থাকবে না। তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের নির্বাচনে অগ্নিসংযোগ সহিংসতা ও ভোট বানচালের চেষ্টাকে কাটিয়ে জয়লাভ করেছে। আমরা বারবার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে এসেছি। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে সরকার গঠন করেনি।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, তার সরকার তৃণমূল পর্যায় থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নের সূচনা করেছে; যাতে মানুষ গ্রামে থেকেও নগর সুবিধা ভোগ করতে পারে। তিনি বলেন, “এদেশের মানুষ একটু শান্তিতে ছিলো স্বস্তিতে ছিলো; উন্নয়ন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল; ঠিক সেই সময়ে এই অবরোধ আর অগ্নিসন্ত্রাস-জালাও পোড়াও শুরু হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “গাড়িতে-বাসে আগুন দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা যেমন ব্যাহত করা হচ্ছে, স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা ঠিকভাবে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারছে না। তাদের লেখাপড়া নষ্ট হচ্ছে।” তিনি আশা করেন, শুভবুদ্ধির জয় হবে এবং ধ্বংস, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার অবসান হবে।
এদিকে, বুধবার (১৫ নভেম্বর) থেকে সারাদেশে পঞ্চম দফায় ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। চতুর্থ ধাপের অবরোধ শেষ হবে মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৬টায়।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ত্যাগে বাধ্য করতে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের অনুষ্ঠানের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করছে বিএনপি।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “অন্যান্য রাজনৈতিক দল; যারা দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসছে, তারাও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করছে।” বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে, শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানান রিজভী। এটি হবে তাদের অবরোধ কর্মসূচির পঞ্চম ধাপ।
এর আগে, শনিবার (১১ নভেম্বর) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি অভিযোগ করেছে যে আরেকটি ভুয়া ও একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।
শনিবার (১১ নভেম্বর) বিএনপির পক্ষে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “সরকার দেশে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী সরকার অতীতের মতো একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ এখন যুদ্ধকালীন সময়ের মতো নীরব ভীতিকর পরিবেশে বসবাস করছে।”